চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার থানাধীন কাপাসগোলা এলাকার হিজরা খালে ছয় মাস বয়সী এক শিশু গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে নিখোঁজ হয়। দীর্ঘ সময় তল্লাশি করেও তার সন্ধান মেলেনি। অবশেষে শনিবার সকাল ৮টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে চাক্তাই খালের আছাদগঞ্জ চামড়া গুদাম মোড়সংলগ্ন অংশে মরদেহটি ভেসে ওঠে। স্থানীয়রা তা দেখতে পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। পরে ফায়ার সার্ভিস মরদেহ উদ্ধার করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চা খাওয়ার সময় কয়েকজন যুবক হঠাৎ খালে একটি শিশুর মরদেহ দেখতে পান। পরে তারা সেটি তুলে আনেন। খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা জড়ো হন এবং পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে মরদেহটি উদ্ধার করে।
নিখোঁজ শিশুটির নাম সেহরিশ। মায়ের নাম সালমা বেগম, বাবার নাম মো. শহিদ। তাঁরা নগরের আছাদগঞ্জ এলাকায় থাকেন। শুক্রবার তাঁরা চকবাজারের কাপাসগোলা এলাকায় মো. শহিদের বোনের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। এটি সালমা বেগমের প্রথম সন্তান। ফেরার পথে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ঘোরাতে গিয়ে সেটি খালের মধ্যে পড়ে যায়।
প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে নালা ও খালে পড়ে পানির স্রোতে মানুষ মারা যাওয়ার ঘটনা নিয়মিত ঘটে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) দাবি করে যে তারা নগরের খাল-নালা পরিষ্কার রাখে। কিন্তু গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মুষলধারে বৃষ্টিতে খাল-নালায় প্রবল স্রোত তৈরি হয়। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় খালের পাশে থাকা নিরাপত্তাবেষ্টনী খুলে রাখা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের চন্দনপুরা স্টেশনের তথ্য কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, “সকালে শিশুর মরদেহ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
জানা যায়, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে নগরের চকবাজার থানাধীন কাপাসগোলা এলাকায় হিজরা খালে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা পড়ে যায়, যাতে শিশুসহ তার মা ও দাদী ছিলেন। তখন খালে বৃষ্টির পানির প্রবল স্রোত ছিল। রাত ১০টার দিকে অনতিদূরের খাল থেকে স্ক্যাভেটারের সহায়তায় মা ও দাদীকে উদ্ধার করা হলেও শিশুটি তলিয়ে যায়।
প্রথমে চসিকের পরিচ্ছন্নকর্মীরা থার্মোকলসহ বর্জ্য অপসারণে কাজ শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান শুরু করে। রাত ১২টার দিকে অভিযান সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। শনিবার সকালে নৌবাহিনীর ছয় সদস্যের একটি টিম দ্বিতীয়বারের মতো উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয়। পরে সাড়ে ৮টার দিকে আছাদগঞ্জ এলাকায় শিশুটির মরদেহ পাওয়া যায়।
ঘটনার পরপরই অটোরিকশাচালক পালিয়ে যান।
বিডি প্রতিদিন/আশিক