৪ জুলাই, ২০২১ ১৯:৩৬

লকডাউনে থেমে নেই মাস্তুল ফাউন্ডেশনের দাফন সেবা

অনলাইন ডেস্ক

লকডাউনে থেমে নেই মাস্তুল ফাউন্ডেশনের দাফন সেবা

সারা দেশে সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যেও করোনায় মৃতদেহ দাফন বা সৎকারে সক্রিয় রয়েছে মাস্তুল ফাউন্ডেশন। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মাস্তুল ফাউন্ডেশনের সেচ্ছাসেবীরা দিন রাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছে।  

ধানমন্ডি মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয় থেকে এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক কাজী রিয়াজ রহমান জানান, দেশের বর্তমানে লকডাউন পরিস্থিতেও আমাদের দাফন সেবা চলমান। প্রতিদিন আমাদের ৩ থেকে ৪ টি লাশ দাফন করতে হচ্ছে। যে পরিমাণে আমাদের কাছে কল আসছে, সে পরিমাণে আমরা সেবা দিতে পারছি না। এ্যাম্বুলেন্স স্বল্পতা, অক্সিজেন সিলিন্ডারের স্বল্পতার কারণে অনেক অসহায়কে সেবা দিতে পারছিনা।

এখন পর্যন্ত ৫১০টি মরদেহের সৎকার করা হয়। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ ও অন্য রোগে আক্রান্ত মৃতদেহ ও রয়েছে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মাস্তুল ফাউন্ডেশন এই দাফন সেবা ও অক্সিজেন সেবা দিয়ে আসছে।

মাস্তুল ফাউন্ডেশনের রয়েছে নিজস্ব দাফন সেবা টিম। যে টিমের সকলের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, মরদেহ গোসল করানো থেকে শুরু করে কাফনের কাপড় পরানো, জানাজার নামাজ পড়ানো, দাফন করা প্রতিটি কাজ এই দাফন টিমের সদস্যরা করে থাকে। বর্তমানে অন্য জায়গায় লাশ গোসল করানো হয়ে থাকে, ভবিষ্যতে নিজেদের একটা স্থায়ী জায়গার মাধ্যমে লাশ গোসলের ব্যবস্থা করা হবে। এর জন্য সমাজের দানবীর ও সামর্থবান ব্যক্তিবর্গের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে মাস্তুল ফাউন্ডেশন।  

দাফন কাজের স্বেচ্ছাসেবীরা এসেছে বিভিন্ন পেশা থেকে, কেউ ব্যাংকার, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ চাকরিজীবী, কেউ সাংবাদিক, কেউ শিক্ষক, কেউ শিক্ষার্থী। নারীদের দাফনের জন্য রয়েছে মাস্তুল ফাউন্ডেশনের আলাদা টিম। এখানে নারী স্বেচ্ছাসেবীরাই সব করে থাকেন।

বাংলাদেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটার এবং সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান করোনা মহামারীর শুরুতে মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফন ও সৎকার করার জন্য মাস্তুল ফাউন্ডেশনকে এ্যাম্বুলেন্স উপহার দেন। সাকিব আল হাসান মাস্তুল ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম সম্পর্কে জেনে অত্যন্ত আনন্দিত হন এবং সামনের দিন গুলোতে মাস্তুল ফাউন্ডেশনের সাথে থাকার আশা ব্যক্ত করেন। তিনি মাস্তুল ফাউন্ডেশনের সন্মানিত উপদেষ্টা হয়ে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে আনন্দিত।

মাস্তুল ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক রেজিস্টার্ড সামাজিক প্রতিষ্ঠান। মাস্তুলের রয়েছে নিজস্ব স্কুল এবং এর বাহিরে ২২ টি স্কুলে, ১২ জেলায় ১১০০ সুবিধাবঞ্চিত গরিব শিক্ষার্থীদের স্কুল ব্যাগ, জুতা, মুজা, বই, খাতা সহ সকল শিক্ষার উপকরন দিয়ে সহযোগিতা করে আসছে। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পুষ্টিকর খাবার, শিশু অধিকার, মৌলিক চাহিদা নিশ্চয়তা করা হচ্ছে। মাস্তুল রয়েছে পিতামাতাহীন/অনাথ/এতিম বাচ্চাদের জন্য “মাস্তুল শেল্টার হোম” আবাসিক/অনাবাসিক মিলে অর্ধশত জন বাচ্চা রয়েছে। মাস্তুলের রয়েছে শেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, যার মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত নারীদের কর্মক্ষম করে তোলা হচ্ছে। এর বাহিরে স্বাবলম্বী প্রজেক্টের মাধ্যমে ২৫০ জনকে স্বাবলম্বী করে তোলা হয়েছে। মাস্তুল ফাউন্ডেশন থেকে মৃত ব্যক্তিদের জানাজা, দাফন কাফন কার্যক্রম ও সৎকার করা হয়ে থাকে। এই কোভিড ১৯ করোনা দুর্যোগে মাস্তুল থেকে করোনাতে আক্রান্ত মৃতদের দাফন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মাস্তুলের রয়েছে অসহায় ও গরিবদের জন্য ফ্রি এ্যাম্বুলেন্স ও অক্সিজেন সেবা।

বর্তমানে মাস্তুল ফাউন্ডেশন শতাধিক করোনা মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন করার পাশাপাশি বিনামূল্যে অক্সিজেন ও এ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়ে আসছে।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর