২৫ মার্চ, ২০২২ ০০:১০

রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে আওয়ামী লীগ নেতাসহ নিহত ২

বিশেষ প্রতিনিধি

রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে আওয়ামী লীগ নেতাসহ নিহত ২

মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু (ফাইল ছবি)

রাজধানীতে অস্ত্রধারীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও একজন। নিহতের একজন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু (৫৪)। তিনি নিজ গাড়িতে বসা ছিলেন। অন্যজন রিকশারোহী সামিয়া আফরিন প্রীতি (২৪)। তিনি ঢাকার একটি কলেজের ছাত্রী বলে জানা গেছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ব্যক্তির নাম মুন্না (২৬)। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গত রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহজাহানপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে অস্ত্রধারীরা এ হামলা চালায়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অস্ত্রধারীরা মোটরসাইকেলে এসে একটি চলন্ত গাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। তখন গাড়ির ভিতর বসা আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়েন। গুলিবিদ্ধ হন চালক মুন্নাও। পাশ দিয়ে যাওয়া রিকশায় বসা প্রীতি গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তার ওপর পড়ে যান। এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন প্রাণভয়ে ছোটাছুটি করতে থাকে। রাত ১১টায় স্থানীয়রা গুলিবিদ্ধ তিনজনকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে টিপু ও প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পুলিশ জানায়, জাহিদুল ইসলাম টিপু যুবলীগ নেতা মিল্কী হত্যা মামলার আসামি। মুন্না টিপুর গাড়িচালক। পুলিশের সন্দেহ, অস্ত্রধারীদের টার্গেট ছিল মূলত আওয়ামী লীগ নেতা টিপু। এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণে রিকশারোহী প্রীতি গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান।

পুলিশের মতিঝিল বিভাগের সবুজবাগ জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মনতোষ বিশ্বাস রাত ১টার দিকে বলেন, ‘এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি। তবে ঘটনাস্থলে সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিটসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কাজ করছেন। এ ছাড়া আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। আহত গাড়িচালক মনির হোসেন মুন্না হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানান, তার মালিক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে নিয়ে এজিবি কলোনি থেকে গাড়িযোগে শাহজাহানপুরের বর্তমান বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে শাহজাহানপুর আমতলা মসজিদ এলাকায় যানজটে আটকে ছিলেন। এ সময় হঠাৎ মুখোশ পরা এক ব্যক্তি তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করলে তারা গুলিবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে টিপু মারা যান। নিহত সামিয়া প্রীতির বান্ধবী সুমাইয়া বলেন, ‘আমরা দুই বান্ধবী রিকশায় তিলপাপাড়া যাচ্ছিলাম। খিলগাঁও রেলগেটের কাছাকাছি যাওয়ার সময় পেছনে ১০-১২টি গুলির শব্দ শুনতে পাই। একই সঙ্গে আগুনের মতো কিছু মনে হচ্ছিল। আমরা রিকশা থেকে নেমে দৌড় দেওয়ার চেষ্টা করি। তবে আমার বান্ধবী পড়ে যায়। একটু পর তাকে ডাকাডাকি করলেও সে আর কথা বলছিল না। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।’

ঘটনার পর মধ্যরাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের উত্তেজিত নেতা-কর্মীরা ভিড় করতে থাকেন। এ সময় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাসপাতাল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আওলাদ হোসেন হাসপাতালে উপস্থিত ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, খুনি যে কেউ হোক তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

বিডি-প্রতিদিন/ওয়াসিফ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর