২ জুন, ২০২৩ ১৮:২৩

বরিশাল সিটি নির্বাচনে ১৯ প্রতিদ্বন্দ্বিকে বিএনপির কারণ দর্শানোর নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশাল সিটি নির্বাচনে ১৯ প্রতিদ্বন্দ্বিকে 
বিএনপির কারণ দর্শানোর নির্দেশ

বরিশাল সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নেয়া বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান ১৯ নেতাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছে দলের কেন্দ্রিয় কমিটি। দলে কোন পদে না থাকলেও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপনকেও এই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে চিঠিতে। 

গত ১ জুন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, গত ১৫ বছর ধরে অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপিসহ জনগণ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রায় ৫ বছর ধরে কারাভোগ করছেন। নিপীড়ক সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা, নির্যাতন এবং প্রায় ৫০ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানি করছে। দলের অনেক নেতাকর্মীকে গুম রাখা হয়েছে। এমতাবস্থায় বিএনপি এই অবৈধ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অথচ আপনি দলের একজন সদস্য হয়ে ব্যক্তি স্বার্থের কথা চিন্তা করে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেছেন। সুতরাং কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তার কারণ দর্শিয়ে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লিখিত জবাব দলের কেন্দ্রীয় দফতরে জমা দেয়ার জন্য আপনাকে নির্দেশ প্রদান করা হলো।

মেয়র পদে বিএনপির নোটিশ পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন। যিনি ২০০৪ সালে ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এবং ২০১০ সালে ছাত্রদল কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য ছিলেন। 

সাধারণ এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে নোটিশ পেয়েছেন ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি সৈয়দ হাবিবুর রহমান, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হাবিবুর রহমান টিপু, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হারুনর রশিদ ও মহানগর যুবদলের সহসভাপতি হুমায়ুন কবির লিংকু, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সিদ্দিকুর রহমান, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ জন যথাক্রমে ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সচিব জিয়াউল হক মাসুম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাবের আবদুল্লাহ সাদি, জেলা তাঁতী দলের সাবেক সভাপতি কাজী মো. শাহিন মোহন ও ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহাবয়ক শাহ্ আমিনুল ইসলাম আমীন, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জেসমিন সামাদ শিল্পি, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ফিরোজ আহমেদ, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি ফরিদ উদ্দিন হাওলাদার, ২৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সদস্য জাহানারা বেগম, সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সদস্য সেলিনা বেগম এবং সংরক্ষিত ১০ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সদস্য রাশিদা পারভীন।

মহানগর বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত জাহিদুর রহমান রিপন বলেন, কেন্দ্রিয় কমিটির চিঠি শুক্রবার সকাল ১১টার মধ্যে মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিল প্রার্থী ১৮ জনের বাসায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী আগামীকাল (১১টার মধ্যে কেন্দ্রিয় দপ্তরে নোটিশের লিখিত জবাব দিতে হবে। কেন্দ্রিয় কমিটি তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে। 

নোটিশপ্রাপ্তির কথা স্বীকার করে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রূপন বলেন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব বিভিন্ন মিডিয়ায় বলেছেন আমি বিএনপি কেউ না। আমি যদি বিএনপির কেউ না হয়ে থাকি তাহলে আমাকে নোটিশ দিল কেন। তিনি বলেন, গত ২৫ মে ছিলো মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। তার আগে আমাকে কেউ এ বিষয়ে কিছু বলেনি। তখন নোটিশ পেলে অবশ্যই প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিতাম। দলের মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ার পর এখন নোটিশ দিলেও এই পরিস্থিতিতে আমার নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার মতো কোন উপায় নেই। আমি জনগণের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের মাঠে আছি এবং থাকবো। বিএনপির চিঠির জবাব দেবেন বলে জানান রূপন। 
সাধারণ এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিও যথা সময়ে বিএনপির চিঠির জবাব দেবেন বলে জানিয়েছেন। 

বিডি প্রতিদিন/এএ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর