১২ আগস্ট, ২০২৩ ১৬:৩৬

কয়েকটি পয়েন্টে ঝুঁকির মুখে তিস্তার বাঁধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

কয়েকটি পয়েন্টে ঝুঁকির মুখে তিস্তার বাঁধ

চলতি মৌসুমে তিস্তা পাড়ে কয়েকদফা বন্যা হয়ে গেছে। বর্তমানে নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। যে কোনো সময়ে আবার বন্যা দেখা দিতে পারে। এরই মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে তিস্তা প্রতিরক্ষা বাঁধের কয়েকটি পয়েন্ট।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, এবার বন্যা মারাত্মক আকার ধারণ না করায় দুই-একটি পয়েন্ট বাদে খুব একটা ঝুঁকিপূর্ণ নেই প্রতিরক্ষা বাঁধ। স্থানীয়দের দাবি, রংপুর শহরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকাকে তিস্তার হাত থেকে বাঁচাতে দ্রুত বাঁধটি সংস্কার করা হোক।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৪ সালে নীলফামারীর জলঢাকা থেকে রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা রেল সেতু পর্যন্ত ৪৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা প্রতিরক্ষা ডানতীর বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। এছাড়া তিস্তা রেল সেতু থেকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পর্যন্ত আরও ২১ কিলোমিটার রয়েছে। ২০১৯ সালে সর্বশেষ ১২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ সংস্কারের কাজ করা হয়েছে। বামতীর বাঁধ রয়েছে তিস্তা ব্যারাজ থেকে লালমনিরহাট হয়ে কুড়িগ্রামের উলিপুর পর্যন্ত মোট ১২০ কিলোমিটার। 

ডানতীর বাঁধের জলঢাকার শৌলমারী এলাকায় দুই কিলোমিটার, আলসিয়াপাড়ায় এক কিলোমিটার ও রংপুরের গঙ্গাচড়ার বিভিন্ন এলাকা। ডানতীর বাঁধের গঙ্গাচড়ার মর্ণেয়া থেকে নোহালী পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। বাঁধের গঙ্গাচড়া উপজেলার চিলাপাক এবার ভাঙনের মুখে পড়লে জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন রক্ষার চেষ্টা করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এছাড়া বিনবিনা, ছালাপাকসহ কয়েকটি পয়েন্ট মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বড় ধরনের বন্যা হলে বাঁধ নদীগর্ভে চলে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

এদিকে এসব বাঁধে নদী ভাঙনের শিকার হওয়া মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে বাস করছেন। বাঁধের অনেক স্থান কেটে সমতল করে স্থানীয় কিছু মানুষ দোকান-পাট ও বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলেছে। দীর্ঘদিন অরক্ষিত থাকায় নীলফামারীর জলঢাকার শৌলমারী ও নোহালী সীমান্ত থেকে রংপুরের কাউনিয়ার নীচপাড়া পর্যন্ত এ বাঁধের বেশিরভাগই অবৈধ দখলদার রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন সময় উচ্ছেদ নোটিশ দিয়েও কার্যকর করতে পারেনি। গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া উপজেলাকে তিস্তার ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য বাঁধটি নির্মাণ করা হলেও অবৈধ দখলদারদের পাশাপাশি ১৯৮৮ সালের বন্যার কারণে বাঁধটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাঁধের প্রস্থ কমপক্ষে ১৪ ফুট থাকার কথা থাকলেও এখন অনেক স্থানেই তা নেই।

এদিকে কয়েকদিন আগের বন্যায় কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা এলাকার একটি বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছিল। বাঁধটি ভেঙে গেলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি আবাদি জমি-বসতভিটা বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গত বছর বন্যার আগে স্থানীয় জনগণের উদ্যোগে বাঁধটি নির্মিত হয়। এক হাজার ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থেও বাঁধটির প্রায় ১০০ ফুট এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দেয়। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ রক্ষায় বালুর বস্তা ফেলছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, এবার বড় ধরনের বন্যা না হওয়ায় বাঁধে তেমন একটা ভাঙন দেখা দেয়নি। একটি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় সেখানে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া আর দুই-একটি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। সেগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ড দেখছে।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর