২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৬:২২
‘জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনে এসেছি’

সখ্যতা থাকলেও আওয়ামী লীগ আমাদের বঞ্চিত করেছে : জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

সখ্যতা থাকলেও আওয়ামী লীগ আমাদের বঞ্চিত করেছে : জিএম কাদের

কথা বলছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, ‌‘আওয়ামী লীগের সাথে সখ্যতা থাকলেও তারা আমাদের বঞ্চিত করেছে। তাদের প্রতি আমাদের ক্ষোভ রয়েছে।’ 

‘অপরদিকে বিএনপির আমলেও আমরা অনেক নির্যাতিত হয়েছিলাম। জাতীয় পার্টির মধ্যে সব সময় অস্থিতিশীলতা ঢুকিয়ে রাখা হয়েছিল। কিছু করতে গেলেই দল ভেঙে যেতে পারে, দলের অস্তিত্ব বিলীন হতে পারে এমন হুমকি সবসময় ছিল। তাই জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রাখতে, সংসদে গিয়ে জনগণের কথা বলতে আমরা নির্বাচনে এসেছি।’ 

আজ শনিবার দুপুরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডে দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, ‘আমরা যে যতই কথা বলি না কেন, দেশের বাহ্যিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হলেও সাধারণ মানুষের মনে উৎকণ্ঠা রয়েছে। সেই কারণে আমি মনে করি, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত অস্বাভাবিক। বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে।’

তিনি বলেন, ‘১৭ নভেম্বর থেকে নির্বাচন বিরোধীদের আন্দোলন কমে যায়। মানুষ নির্বাচনীমুখী হয়েছে। নির্বাচনে কেউ যাক কিংবা না যাক, আমরা বুঝতে পেরেছিলাম নির্বাচন সময়মতো হয়ে যাবে, নির্বাচন ঠেকানোর উপায় থাকবে না। আমাদের লক্ষ্য ছিল সংসদে থাকা ও দলের ঐক্য ধরে রাখা। আমরা বিগত সময় সংসদে গিয়ে জনগণের পক্ষে আমাদের অবস্থান তুলে ধরে আস্থা সৃষ্টি করতে পেরেছিলাম। সেটার বাইরে চলে গেলে জাতীয় পার্টির অস্তিত্ব বিলীন হতে পারে। শক্তিশালী প্লাটফর্ম না থাকলে দলের রাজনীতি বিলীন হতে পারে। জাতীয় পার্টির ভবিষ্যতের জন্য নির্বাচনে যাওয়াটা জরুরি ছিল।’

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিএনপিসহ বড় রাজনৈতিক দল দীর্ঘদিন ধরে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। সরকার পতনের একদফা আন্দোলন ও নির্বাচন তফসিল ঘোষণার পর তারা নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছে। অপরদিকে সরকার সময়মতো সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। এমন পরিস্থিতিতে দুই পক্ষের বাইরে থেকে আমরা সক্রিয় স্বাধীনভাবে রাজনীতি এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় পার্টি বড় ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেবে এমন সাংগঠনিক শক্তি এবং অর্থ ছিল না। সরকারবিরোধী আন্দোলন অর্থ ছাড়া চলে না। আন্দোলনে নামলে সরকারের নিষ্পেষণ শুরু হয়, মামলা-মোকদ্দমা হয়। এসব ফেস করতে বিপুল অর্থের প্রয়োজন।’

‘আমাদের মনে ভয় ছিল নির্বাচনে গেলে আমাদের কোনো সুফল আসবে কি না। আওয়ামী  লীগ সরকার নিজেদের বৈধতার জন্য আমাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেছে। এর ভিত্তিতে কিছু আসন থেকে তাদের প্রার্থী তুলে নিয়েছে। এর মানে এই নয় যে আমাদের সাথে আসন ভাগাভাগি হয়েছে। কারণ, আওয়ামী লীগ ওইসব আসন থেকে তাদের প্রার্থী তুলে নিলেও তাদের দলের স্বতন্ত্রসহ অন্য দলের প্রার্থী রয়েছে। এছাড়া জাতীয় পার্টি তাদের কোনো আসন থেকে প্রার্থী তুলে নেয়নি। ফলে এ নির্বাচনকে একটি জোটগত নির্বাচন বলা যাবে না। সরকার নিরপেক্ষ প্রশাসন, অর্থ ও পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত নির্বাচন করার অঙ্গীকার করেছে। সেই পরিবেশে দেশে আমরা নির্বাচনে এসেছি। এর ব্যতয় ঘটলে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।’

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান, রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার সভাপতিত্বে সভায় বক্তৃতা করেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান এসএম ইয়াসির আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। 

এর আগে জিএম কাদের নগরীর পল্লী নিবাসে দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত করেন। এরপর মুন্সিপাড়া কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করেন এবং মাওলানা কারামত আলী জৌনপুরী (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর