ঢাকা-৫ আসনে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভবনা দেখছেন ভোটাররা। আর এ লড়াইয়ে আওয়ামী লীগের তিন নেতা। একজন দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে লড়ছেন, বাকি দুইজন ট্রাক ও ঈগল নিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। ঢাকার প্রবেশদ্বার যাত্রাবাড়ী, ডেমরা ও কদমতলী থানার আংশিক নিয়ে গঠিত এ আসন। জয় পরাজয় যারই হোক না কেন, ভোটের ব্যবধান খুব কম হবে বলে স্থানীয়দের ধারণা। বিএনপি অংশ না নিলেও এ আসনে ভোট জমে উঠেছে তিন আওয়ামী লীগ নেতার লড়াইয়ে।
এ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশিদ মুন্না। মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন প্রয়াত এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার ছেলে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন। এ আসনে আরও কয়েকজন প্রার্থী থাকলেও এলাকায় তেমন পরিচিত নন বলে জানা গেছে। প্রচার-প্রচারণা শুরুর পর থেকেই হারুনর রশীদ মুন্না, মশিউর রহমান মোল্লা ও কামরুল হাসান ব্যাপক নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। সকাল থেকেই মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে প্রচার-প্রচারণার নানা আয়োজন। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বানিয়েছেন নির্বাচনি ক্যাম্প। চলছে প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনি গান।
দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৪টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এই আসনের ভোটার সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে এবার ১২ জন সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছেন। নানা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়িতে চলছে সবার প্রচার-প্রচারণা। তবে আওয়ামী লীগের তিন নেতা ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর তেমন প্রচার-প্রচারণা নেই।
সরেজমিনে ঢাকা-৫ আসন ঘুরে বিভিন্ন ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছে দেখা গেছে, নানা উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে চলছে প্রচার কার্যক্রম। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইছেন আওয়ামী লীগের ৩ নেতা (এমপি প্রার্থী)। তারা সবাই ভোটারদের দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
স্থানীয়রা বলছেন, ঢাকা-৫ আসনে ১২ জন প্রার্থী হলেও নৌকা, ট্রাক ও ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে। তিন প্রার্থী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা। আর তাদের জনপ্রিয়তাও রয়েছে অনেক। একেকজন একেক দিক থেকে এগিয়ে রয়েছেন।
অপরদিকে নৌকার প্রার্থী হারুনর রশিদ মুন্নার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বর্তমান সাংসদ কাজী মনিরুল ইসলাম মনু। এক সময় তাদের মাঝে নানা দ্বন্দ্ব থাকলেও এখন তারা এক হয়েই নৌকাকে জয়ী করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। আরেক প্রার্থী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রিপনও তরুণদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। ফলে তারও সম্ভাবনা থাকছে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার।
ট্রাকের প্রার্থী মশিউর রহমান মোল্লা সজল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ ঢাকা-৫ আসনের রাজনীতিতে জড়িত। সব সময়ে আমি ও আমার পরিবার সর্বস্তরের মানুষের পাশে থেকেছি। আমার এই আসনের স্থানীয় ছেলে। আমার পিতা দীর্ঘদিন এই আসনে এমপি ছিলেন। আমাকে সবাই পছন্দ করেন। আমি বিশ্বাস করি এই আসনের মানুষ ভোটের মধ্যমে আমাকে নির্বাচিত করে জানান দেবেন আমি এই আসনের যোগ্য কিনা।
কামরুল হাসান রিপন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা-৫ আসনে আমি নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। জামায়াত-বিএনপির বিরুদ্ধে রাজপথের আন্দোলন করে যাচ্ছি। সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমি আগে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি। এখন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হারুনর রশিদ মুন্না নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হবেন বলে আশা কর্মী-সমর্থকদের। মুন্না যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সঙ্গে দির্ঘদিন যাবৎ রাজনীতি করে আসছেন। এবার দল থেকে মনোনয়ন নিয়ে মুন্না নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্যের পাশাপাশি নেতাকর্মীরা তার পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় নেমেছেন।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত