১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ১৭:৫৫

জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারসহ ৭ দফা দাবি ‌‘মায়ের কান্না’র

অনলাইন ডেস্ক

জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারসহ ৭ দফা দাবি ‌‘মায়ের কান্না’র

‘সেদিন আমার বয়স ছিল ৩ বছর, আমার বাবাকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়, আমি বাবা হত্যার বিচার চাই, খুনি জিয়ার মরণোত্তর বিচার চাই।’ এভাবেই বলছিলেন রিনা বেগম।

তিনি সাবেক সার্জেন্ট (বিমান বাহিনী) মোর্শেদ আলমের মেয়ে। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বিদ্রোহ দমনের নামে ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান ১১৫৬ জনকে ষড়যন্ত্রের নামে হত্যা করা হয়। জিয়ার মরণোত্তর বিচার ও সংসদ ভবন এলাকা থেকে তার কবর অপসারণসহ সাত দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন হত্যাকাণ্ডের শিকার বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও সেনাবাহিনীর পরিবারের সদস্যরা।

সোমবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে মায়ের কান্না সংগঠন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওই দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ১৯৭৭ সালে ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা সার্জেন্ট সাইদুর রহমান মিঞার ছেলে মো. কামরুজ্জামান মিঞা লেলিন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

এ সময় মায়ের কান্না সংগঠনের আরো সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ঢাকায় জাপানি বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পরিকল্পিতভাবে একটি অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তৈরি করেন। পরবর্তীতে তথাকথিত বিদ্রোহ দমনের নামে জিয়াউর রহমান একদিনের সামরিক আদালতে বিচার করে সেই রাতেই ফাঁসি সম্পন্ন করেন নিরাপরাধ সামরিক সদস্যদের। রাতের আঁধারে কারফিউ দিয়ে ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর ও বগুড়া কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি কার্যকর করে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে গুম হওয়া ব্যক্তিদের কোথায় সমাহিত করা হয়েছে এবং সেই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে মায়ের কান্না সংগঠনের পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি জানানো হয়।

দাবিগুলো হচ্ছে-১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর তথাকথিত সামরিক বিদ্রোহ দমনের নামে যাদের অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, তাদের কোথায় সমাহিত করা হয়েছে রাষ্ট্রীয়ভাবে সেইস্থান চিহ্নিত করে দিতে হবে।

সামরিক আদালতে ফাঁসির ঘটনায় বিমান বাহিনীর নিহত সদস্যদের নির্দোষ ঘোষণা, খুনি জিয়া কর্তৃক যে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের অন্যায়ভাবে ফাসি দেওয়া হয়েছে তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করা এবং শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে, অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেওয়া, কারাদণ্ড এবং চাকরিচ্যুত সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের স্ব স্ব পদে সর্বোচ্চ ব্যাংকে পদন্নতি দেখিয়ে বর্তমান স্কেলে বেতন-ভাতা ও পেনশনসহ পরিবারের সদস্যদের পুনবার্সন এবং সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে, খুনি জিয়ার মরণোত্তর বিচার করতে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে, খুনি জিয়ার ভুয়া কবর জাতীয় সংসদ এলাকা থেকে অপসারণ করতে হবে (২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে মায়ের কান্না সংগঠনের সদস্যরা জিয়ার ভুয়া কবর অপসারণের কাজ শুরু করে)।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর