২৭ জুন, ২০২৪ ১২:৩৩

বাঘা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দাফন সম্পন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

বাঘা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দাফন সম্পন্ন

রাজশাহীর বাঘায় পৌর মেয়র আক্কাস আলী ও তার সমর্থকদের হামলায় নিহত বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বাঘা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পৌর এলাকার গাঁওপাড়া পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

আশরাফুল ইসলাম বাবুলের জানাজায় অংশ নেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদ দারা, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সাবেক এমপি আয়েন উদ্দিন, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার সহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। 

বুধবার বিকাল ৪টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশরাফুল ইসলাম বাবুলের মৃত্যু হয়। মাথায় গুরুতর জখম নিয়ে ২২ জুন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলেন আশরাফুল ইসলাম বাবুল।

২৩ জুন চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করেন। এরপর থেকে আইসিইউতে ছিলেন বাবুল। বুধবার দুপুর থেকে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। বিকাল ৪টার দিকে তিনি মারা যান।

গত ২২ জুন বাঘায় পৌরসভার সেবা বৃদ্ধি ও কর কমানোর দাবিতে চলা মানববনন্ধনে হামলা চালিয়ে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলকে কুপিয়ে জখম করেন পৌর মেয়র আক্কাস আলী ও তার অনুসারীরা। ওইদিন সকাল ১০টায় উপজেলা গেটের সামনে মানববন্ধন চলাকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে দু'পক্ষের মধ্যে চলা সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বাঘা পৌর সদর। প্রথম থেকেই পুলিশ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।

পরবর্তীতে অতিরিক্ত পুলিশ এসে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপর উপজেলার মধ্যে ফাঁকা মাঠে পড়েছিলেন বাবুল। তাকে পুলিশ সদস্যরা উদ্ধার করেন। গুরুতর আহত বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলকে ওইদিনই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  

সংঘর্ষের ঘটনায় পরদিন ২৩ জুন দুপুরে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন।

মামলায় বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাছ আলী, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মোকাদ্দেসসহ ৪৬ জনের নাম উল্লেখ ও ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

ওই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে- জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পাকুড়িয়া ইউপির চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম (৩৪), জেলা ছাত্রলীগের আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মারুফ হাসান (৩২), চক ছাতারীর গোলাম মোস্তফা (৩৮), বানিয়াপাড়ার মতিউর রহমান (৩০), উত্তর মিলিক বাঘা গ্রামের তরঙ্গকে (২৩) ও নাসির ইসলাম (২৮) এবং জেলা যুবলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক শাহজামাল সরকার।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শনিবার (২২ জুন) সকাল ১০টার দিকে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের ডাকে উপজেলা পরিষদের সামনে পৌরসভার দুর্নীতির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন চলছিল। এ সময় আসামিরা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। সেখানে কয়েকটি পিস্তলের গুলিবর্ষণ করা হয়। আতঙ্কে তারা মানববন্ধন ছেড়ে উপজেলা চত্বরের ভেতরে পালাতে গেলে আসামিরা এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল ও পাথর ছোড়েন। এ অবস্থায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম উপজেলা অডিটরিয়ামের সামনে পড়ে গেলে তাকে চায়নিজ কুড়াল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার বাঁ পাশে আঘাত করেন আক্কাছ আলী। ২ নম্বর আসামি মেরাজুল ইসলাম তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আশরাফুল ইসলামের ঘাড়ে আঘাত করেন। আসামিদের ইটপাটকেল ও পাথরের আঘাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের গ্লাস ও কয়েকটি চেয়ার ভাঙচুর করা হয়।

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর