২৮ জুন, ২০২৪ ১৭:৪৩

সংরক্ষণের অভাবে প্রতিবছর রংপুরে ৫০ কোটি টাকার আম নষ্ট

নজরুল মৃধা, রংপুর

সংরক্ষণের অভাবে প্রতিবছর রংপুরে ৫০ কোটি টাকার আম নষ্ট

রংপুরে প্রতিবছর দুই থেকে আড়াইশ কোটি টাকার হাড়িভাঙ্গা আম বিক্রি হয়। এর বাইরে সঠিকভাবে সংরক্ষণের অভাবে এবং বিভিন্নভাবে অপচয়ের কারণে প্রতি বছর ৫০ কোটি টাকার বেশি আম নষ্ট হচ্ছে রংপুরে। এ ছাড়া কাঁঠাল, লিচু, আনারস, পেঁপে ইত্যাদি ফল গড়ে মোট উৎপাদনের ২০ থেকে ৪০ শতাংশ নষ্ট হচ্ছে।

দীর্ঘদিন থেকে রংপুরে একটি ফল সংরক্ষণাগার স্থাপনের দাবি উঠলেও বিষয়টি আমলে নেননি সরকার। তবে সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ রংপুরের হাড়িভাঙ্গা আমের মেলা উদ্বোধন করতে এসে কথা দিয়েছেন মিঠাপুকুরে আম ও সবজি সংরক্ষণের জন্য  একটি বিশেষায়িত হিমাগার করা হবে। এতে অনেকে আশার আলো দেখছেন।

রংপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার রংপুর জেলায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আমের ফলন হয়েছে। এর মধ্যে হাড়িভাঙ্গার ফলন হয়েছে প্রায় পৌনে দুই হাজার হেক্টরের ওপর। প্রতি হেক্টরে ফলন ধরা হয়েছে গড়ে ১০ থেকে ১২ মেট্রিক টন। সেই হিসেবে এবার আমের উৎপাদন আশা করা হচ্ছে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন অর্থাৎ ৩৫ লাখ কেজির বেশি। প্রতিকেজি ৭০/৮০ টাকা দরে বিক্রি হলে আড়াই’শ কোটি টাকার ওপরে আম বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু সঠিকভাবে আম সংরক্ষণ করতে না পারায় প্রতিবছর আমের ২৫ থেকে ২৭ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়। যার বাজার মূল্য ৫০ কোটি টাকার ওপরে।

এ ছাড়া কাঁঠাল ৪০ থেকে ৪৩ শতাংশ, কলা ২০ থেকে ২৪ শতাংশ, লিচু ২০ থেকে ২৪ শতাংশ, আনারস ৪০ থেকে ৪৩ শতাংশ ও পেঁপে ২৫ থেকে ৩৯ শতাংশ সঠিকভাবে সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয় প্রতি বছর।

হাড়িভাঙ্গা আমের ফলন ৮০ শতাংশের বেশি হলেও ফজলি, কেরোয়া, এছাহাক তেলি, ছাইবুদ্দিন, আশ্বীনি, সাদা নেংড়া, কালা নেংড়া, কলিকাতা নেংড়া, মিশ্রী ভোগ, গোপাল ভোগ, আম্রপালি, সাদা রচি, চোচা, আঁটিসহ হরেক প্রজাতির আম রয়েছে। তবে হাড়িভাঙ্গা আমের চাহিদাই বেশি। এখন প্রতিকেজি হাড়িভাঙ্গা আম বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭৫ টাকায়। তবে কদিন পরে এই আমের দাম প্রতিকেজি দেড়’শ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে।

রংপুরের বুড়িরহাট হটিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক আবু সায়েম বলেন, মৌসুমের সময় আমাদের দেশের অনেক ফল ও সবজি সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। মৌসুমে অধিক ফল ও সবজি উৎপাদনের ফলে কৃষকরা অনেক সময় ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হয়। এ ছাড়া কৃষকরা সংরক্ষণের সঠিক পদ্ধতি না জানার কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তবে আশার আলো সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রী কথা দিয়েছেন মিঠাপুকুরে বিশেষায়িত একটি হিমাগার  নির্মাণ করা হবে। হিমারগারটি নির্মাণ করা হলে এই অঞ্চলের কৃৃষকরা আম-সবজিসহ বিভিন্ন ফল এখানে সংরক্ষণ করতে পারবেন। সেই সাথে ন্যায্যমূল্যও পাবেন।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর