১২ জুলাই, ২০২৪ ১৬:২৮

পুরান ঢাকার বেশিরভাগ সড়ক পানির নিচে, সীমাহীন দুর্ভোগে জনসাধারণ

মাহির মিলন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার বেশিরভাগ সড়ক পানির নিচে, সীমাহীন দুর্ভোগে জনসাধারণ

তিন-চার ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাজধানীর পুরান ঢাকার বেশিরভাগ সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন পুরান ঢাকার বসবাসরত বাসিন্দাসহ সড়কে বের হওয়া জনসাধারণ। শুক্রবার সকালের বৃষ্টিতে পুরান ঢাকার বেশিরভাগ সড়ক ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুরান ঢাকার বেশিরভাগ সড়কে হাঁটু সমান পানি আটকে থাকতে দেখা যায়। এছাড়াও কিছু কিছু সড়ক এখনো কোমর সমান পানির নিচে রয়েছে। 

সরজমিনে দেখা যায়, পুরান ঢাকার ধোলাইখাল, শাঁখারি বাজার, রায়সাহেব বাজার, তাঁতি বাজার, নয়াবাজার, বাবু বাজার, বংশাল, মালিটোলা, নাজিরা বাজার ও গুলিস্তানসহ আশেপাশের সবগুলো সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে এসব রুটে চলাচলকারী যানবাহনসহ জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষেরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের কষ্ট যেন দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। 

পুরান ঢাকা ঘুরে আরও দেখা যায়, বৃষ্টির পানিতে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় আশেপাশের সবগুলো দোকানপাট এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকেছে। অনেক দোকান মালিক পানি সরানোর চেষ্টা করলেও কোনোভাবে ড্রেন দিয়ে নামছে না পানি। এছাড়াও মুদি দোকান, ওষুধের দোকান ও খাবার হোটেলসহ অনেক নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান খুলতে পারছেন না বিক্রেতারা। তবে কিছু ওষুধ ও খাবার হোটেল খোলা থাকলেও সড়কে পানি থাকায় বিপাকে পড়েছে ক্রেতা-বিক্রেতারা।

এদিকে, পানি না কমায় সড়কে চলাচলকারী সিএনজি, মোটরসাইকেল, বাস, কার, এম্বুলেন্স ও রিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন দেখা দিয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত পানির কারণে একাধিক বাস, সিএনজি ও মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনে পানি ঢুকে মাঝ রাস্তায় বন্ধ হয়ে পড়ে। সেই সাথে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন বেশিরভাগ যানবাহন চালকেরা। তবে এদিন পুরান ঢাকার সড়কে তীব্র আকার ধারণ করেছে বৃষ্টির পানির সাথে যানজট। 

জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষেরা জানান, ‘সামান্য বৃষ্টিতে এভাবে পুরান ঢাকাকে আগে পানির নিচে দেখিনি। সবগুলো সড়কে এভাবে পানি থাকায় আমাদের কষ্টের শেষ নেই। সরকারের এত উন্নয়ন দিয়ে আমরা কি করব। যদি এভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হয় আমাদের।’ 

গুলিস্তান থেকে সদরঘাটে যাচ্ছেন পথচারী কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘এত পানি হবে কল্পনা করিনি। জরুরি দরকারে গ্রামে যাব এজন্য বৃষ্টির দিনে বের হয়েছি। গুলিস্তান থেকে কোমর সমান পানি দিয়ে হেঁটে এসেছি। রিকশা দিয়ে আসব ভাবলাম কিন্তু অতিরিক্ত ভাড়ার জন্য পায়ে হেঁটে এসেছি।’

দোকান মালিকেরা বলেন, ‘এভাবে পানি না কমলে তো আমাদের লাখ লাখ টাকার পণ্য নষ্ট হয়ে যাবে। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি তারপরও পানি নামছে না। ড্রেনগুলোর অবস্থা একেবারে নাজেহাল। এর মধ্যে আরও বৃষ্টি হলে মনে হচ্ছে বুক সমান পানি হয়ে যাবে। আল্লাহ জানে আমাদের কি অবস্থা হবে।’

পুরান ঢাকার স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘আমাদের এমন দুর্ভোগের চিত্র দেখতে এখন কেউ আসবে না। শুধু ভোটের সময় তাদের দেখা যাবে। এখন পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশনের কাউকে দেখিনি ড্রেন পরিস্কার করতে আসতে। এতে একে তো চারিদিকে পানি, তার উপর বাসা-বাড়িতে গ্যাস নেই। তাই আজ শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও বাসা থেকে বের হয়ে বাইরে খাবার কিনতে যেতে হচ্ছে। 

বিডি-প্রতিদিন/শআ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর