৭ আগস্ট, ২০২৪ ২১:১৫

কুমিল্লার এসপি অফিসে তালা, ডিসি অফিসে সুনসান নীরবতা

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার এসপি অফিসে তালা, ডিসি অফিসে সুনসান নীরবতা

কুমিল্লার এসপি অফিসে তালা এবং ডিসি অফিসে সুনসান নিরবতা লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া আদালতে মানুষ থাকলেও নেই কোনো পুলিশ। নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন সচেতনরা। 

বুধবার (৭ আগস্ট) কুমিল্লার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের গেটে তালা। কয়দিন আগে কুমিল্লার শীর্ষ সকল পুলিশ কর্মকর্তার যাওয়া আসা ছিল এখানে। এখান থেকেই নিরাপত্তার সিদ্ধান্ত যেত থানায় থানায়। এছাড়া কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ সকল অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় একই অবস্থা দেখা গেছে। 

জানা গেছে, স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার দেশ থেকে পলায়নের পর থেকে সারাদেশে পুলিশের থানা ফাঁড়ি ও আওয়ামী, ছাত্র, যুব ও সেচ্ছসেবক লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা শুরু হয়। এতে কুমিল্লাসহ সারাদেশে পুলিশ হত্যার ঘটনা ঘটে। তারপর থেকেই কুমিল্লার থানা ও ফাঁড়ি থেকে নিরাপদ দূরত্বে চলে যান পুলিশ সদস্যরা। 

পুলিশ লাইন্সের নিরাপত্তায় রয়েছে সেনাবাহিনীর সদস্যা। পুলিশ লাইন্সের প্রত্যেকটি ফটকে অন্তত ১০ জন করে সেনাবাহিনীর সদস্য দেখা গেছে। 

এদিকে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা লাকসাম উপজেলার এরশাদ হোসেন বলেন, পুলিশ হুকুমের চাকরি করেন। তারাতো নিজের ইচ্ছায় কাউকে গুলি করেনি। তাদের ওপর হামলা করা ঠিক না। যদি কেউ অপরাধ করে তাকে শাস্তি দেবে আইন। হামলা করায় পুলিশরা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য সব বন্ধ রেখেছেন। নতুন সরকারের কাছে দাবি করবো দ্রুত তাদের নিরাপত্তা দিয়ে কর্মস্থলে ফেরান। না হয় আইনশৃঙ্খলার আরও অবনতি হবে।

কুমিল্লার এক পুলিশ কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, আমাদের অনেক সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে। তাই পুলিশের নিরাপত্তার জন্যই আমরা নিরাপদ স্থানে আছি। তবে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও নির্দেশনা মতো কার্যক্রম শুরু হবে।

এদিন একটি ফটক খোলা রয়েছে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের। ভেতরে আছেন হাতে গোনা কয়েকজন কর্মকর্তা। কর্মচারীদের মধ্যেও অনেকে আসেননি। না প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা এখনও নিজেদের গাড়ি ব্যবহার করতে পারছিনা। এখানে কোন পুলিশ বা আনসার নেই। এখানে কিছুক্ষণ আগেও গোলাগুলি হয়েছে। কারা করেছে জানিনা। এখন আল্লাহ ছাড়া আসলে কোন উপায় নেই। কয়েকজন কর্মকর্তা এসেছেন হয়তো দুপুর পর্যন্ত থেকে চলে যাবেন। 

তিনি বলেন, আমরা চাই দ্রুতই নতুন সরকার ক্ষমতায় আসুক এবং দেশ ও জনতার নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নিক। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এদিতে কুমিল্লার আদালত ফটক থেকে প্রত্যেকটি ভবনে প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। লোকমান হোসেন নামের একজন বলেন, আমরা আত্মীয়দের জামিনের আবেদন করতে এসেছি। চলমান আন্দোলনে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু আদালতে কোন পুলিশ বা আইশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দেখিনি। কিছুটা অনিরাপদ মনে হচ্ছিল। যে যেভাবে পারছে গাড়ি ঢুকিয়ে দিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে যানজট সৃষ্টি করছে। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর