গাজীপুরের টঙ্গীতে মায়ের হাতেই খুন হয়েছে নিজ দুই সন্তান। অভিযুক্ত সালেহা তার নিজের অপরাধের লিখিত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আদালতে। তিনি বলেন, প্রথমে মেয়েকে, পরে ছেলেকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। কি কারণে এমন কাজটি করলেন, সে বিষয়ে তিনি বলেন, আমার সঙ্গে থাকা জ্বীন আমার সামনে এসে আমাকে বলেছে, ওদের মেরে ফেলতে, এই কাজটি করলে আমার মঙ্গল হবে। বারবার বলার পর, আমি কিছু বুঝে ওঠতে না পেরে, ঘরে থাকা বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করি।
তিনি আরো জানান, পরে যখন তার জ্ঞান ফিরে তখন তিনি বুঝতে পারেন যে, এই কাজটি করা ভুল হয়েছে।
আদালতে এমন অপরাধের লিখিত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
নিহত আব্দুল্লাহ ও মালিহা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর থানার তাতোয়াকান্দি গ্রামের আ. বাতেনের ছেলে ও মেয়ে। ঘটনার পর নিহতদের গ্রামের বাড়ির করবস্থানে দাফন করা হয়। নিহতদের চাচা আরমান বলেন, ছেলে ও মেয়েকে দাফন করার পর রাত ১২টায় কবরস্থানে গিয়ে বসে কান্নাকাটি করছিলেন বাবা। বর্তমানে ছেলে মেয়ের শোকে পাগল প্রায়। কথাবার্তা ঠিকঠাক বলছেন না।
এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহ আল রুমান বলেন, মা সালেহাকে আটকের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ ও পরে আদালতে নিজের অপরাধের লিখিত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সেখানে নিজ ছেলে ও মেয়েকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন।
উল্লেখ্য,গত শুক্রবার বিকালে টঙ্গীর পূর্ব আরিচপুর রূপবানেরমার টেক এলাকার একটি আটতলা ভবনের দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাট থেকে মালিহা আক্তার (৬) ও আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (৪) নামে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতদের বাবা বাতেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় মা সালেহাকে হত্যা মামলার আসামি করে আদালতে পাঠানো হয়। নিহত মালিহা, আব্দুল্লাহ ও বড় বোন ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী বর্ষা (৯)পরিবারের সাথে বসবাস করতেন। ঘটনার সময় একই এলাকায় বড় চাচা আরমানের বাসায় ছিলেন বড় বোন বর্ষা।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল