১৫ অক্টোবর, ২০২২ ১৯:১৯

স্বনির্ভর হতে হিজড়াদের মাঝে পাথওয়ের সেলাই মেশিন বিতরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বনির্ভর হতে হিজড়াদের মাঝে পাথওয়ের সেলাই মেশিন বিতরণ

ভিক্ষা বা হাত পেতে নয়, বিকল্প কর্মসংস্থান ও জীবনমানের উন্নয়নে তৃতীয় লিঙ্গে মানুষের মাঝে সেলাই মেশিন বিরতণ করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পাথওয়ে।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরে পাথওয়ের প্রধান কার্যালয়ে হিজরাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদের নির্বাহী সচিব (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ পরিষদের উপ-পরিচালক ভবেন্দ্র নাথ বাড়ৈ।

অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, চাঁদাবাজি কিংবা হাত পেতে জীবিকা নয়, স্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ চায় তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী। তাদের মূলধারায় আনতে কাজ করছে সরকার। তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা তাদের নানান অসুবিধার কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই বলেই তাদের চাঁদাবাজি কিংবা বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। হিজড়াদের অপরাধ থেকে ফিরিয়ে কর্মসংস্থানে কাজ করছে পাথওয়ে। পাথওয়েকে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সকল সুযোগ-সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দেন তিনি। 

জসিম উদ্দিন বলেন, পৃথক লিঙ্গীয় পরিচয়ের কারণে হিজড়ারা মূলধারা থেকে বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়। পরিবারের কাছে তারা কোনও সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজ পরিবার তাদের বিচ্ছিন্ন করে দেয়। তাছাড়া পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নতার পাশাপাশি পারিবারিক সম্পত্তির ওপর তাদের কোনো অংশীদারিত্ব দেওয়া হয় না।

অনুষ্ঠানে পাথওয়ে‘র কর্ণধার নির্বাহী পরিচালক মো. শাহিন বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের সম্প্রদায়ের মানুষেরা সমাজের সর্বক্ষেত্রে অবজ্ঞা, অবহেলা ও নানা অপমানের শিকার হয় সবসময়। তারা খুবই অসহায়, তাই এদের জীবনমান উন্নয়ন খুবই জরুরি। আর এরজন্য যে বিষয়গুলো বেশী প্রয়োজন তা হলো সর্বদাই তাদের প্রতি সুন্দর আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তন করতে হবে আমাদের।

মিতনি বলেন, তারা আমাদের কারো না কারো সন্তান, তাই তাদের দূরে ঠেলে না দিয়ে স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতে হবে। কর্মক্ষেত্রে তাদেরকে সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। তবেই ধীরে ধীরে একদিন সমাজের মূল স্রোতধারায় পর্যায়ক্রমে ফিরে আসবে অবহেলিত এই জনগোষ্ঠী। জৈবিক চাহিদার বাহিরে হিজড়া সম্প্রদায়ের মানুষের সকল প্রকার কর্মক্ষমতা আছে তবে কেন তারা পিছিয়ে?

তিনি বলেন, বৃহত্তর মিরপুরে বসবাসরত হিজড়া সম্প্রদায়ের মানুষগুলোর জীবন যাপন দেখে আমার নিজের কাছে খুব খারাপ লাগে আমি তাদের সাথে কথা বলতে আগ্রহ প্রকাশ করলে তারা তাদের জীবনের না বলা গল্প আমার সাথে শেয়ার করে এবং বলে আমরা আর এ ভাবে বেঁচে থাকতে চাই না? আমরা নিজেরা নিজেদের পাঁয়ে দাঁড়াতে চাই। এমন প্রতিক্রিয়ার কথা ব্যক্ত করেন তারা। তাই তাদেরকে সমাজের মূল স্রোতধারায় ফেরাতে পাথওয়ের এ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর