৩০ আগস্ট, ২০২৩ ১৯:১১

‘৮৪ ভাগ মানুষ খেলার মাঠ থেকে বঞ্চিত’

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘৮৪ ভাগ মানুষ খেলার মাঠ থেকে বঞ্চিত’

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় মানুষের প্রবেশাধিকার আছে মাত্র ৪২টি মাঠে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) ২০১৯ সালের গবেষণা অনুযায়ী ঢাকা শহরের মাত্র ১৬ ভাগ মানুষ খেলার মাঠের পরিষেবার মধ্যে বসবাস করে। বাকি ৮৪ ভাগ মানুষ খেলার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

বুধবার রাজধানীর এক হোটেলে ‘ঢাকা মহানগরীর খেলার মাঠ-পার্ক-গণপরিসর সুবিধাদির এলাকাভিত্তিক সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে টেকসই পরিকল্পনা’ শীর্ষক এক নগর সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে এসব তথ্য তুলে ধরেন ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান। সংলাপের আয়োজন করা হয় আইপিডি; সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশ এবং নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম বাংলাদেশ।

নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি অমিতোষ পালের সভাপতিত্বে সংলাপে বক্তব্য দেন, আইপিডি’র নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আদিল মোহাম্মদ খান, আইপিডি’র উপদেষ্টা অধ্যাপক আকতার মাহমুদ, সেভ দ্য চিলড্রেনের মানবসম্পদ পরিচালক মোস্তাক হোসাইন, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের সিনিয়র অপারেশন ম্যানেজার চন্দন জেড গুমেজসহ বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি।

মূল প্রবন্ধে পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, নগর পরিকল্পনার মানদণ্ড অনুযায়ী ঢাকা মহাগরীতে ৭৯৫টি এবং চট্টগ্রামে ৫৪১টি খেলার মাঠের ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া রাজশাহীতে ৩৭টি, খুলনাতে ৬৫, সিলেটে ৪০ ও বরিশালে ৪৫টি খেলার মাঠের ঘাটতি রয়েছে।

নগর সংলাপে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অঞ্চল নগর ও পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, রাজধানীর অনেক আবাসিক এলাকার খেলার মাঠও এখন প্লটে পরিণত হয়েছে। কোথাও গণপরিসর বা মাঠ নিয়ে কারও কোন উদ্যোগ নেই। শারীরিক প্রয়োজনে খাবার যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তির জন্য মাঠও গুরুত্বপূর্ণ।

সভাপতির বক্তব্য অমিতোষ পাল বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সামর্থ্য অনেক বেড়েছে। কিন্তু গত ৫০ বছরে আমাদের খেলার মাঠ বা গণপরিসর বাড়েনি। পরিকল্পনার মানদণ্ড অনুযায়ি ৩-৫ হাজার লোকের জন্য দু’টি মাঠ প্রয়োজন। সে হিসেবে ঢাকা শহরের দুই কোটি জনসংখ্যার জন্য হাজারেরও বেশি মাঠ থাকা প্রয়োজন। একইসাথে ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) বলা হয়েছে, প্রতিটি ওয়ার্ডে অন্তত একটি করে মাঠ ও পার্ক এবং স্কুল করা হবে। ড্যাপে পরিকল্পনা থাকলেও এগুলো কোন কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করবে। নাকি ড্যাপ শুধু কাগুজেই থাকবে!

বক্তারা বলেন, মাঠের ঘাটতির ফলে নগর এলাকার অধিকাংশ শিশু-কিশোর খেলার মাঠ না থাকবার কারণে খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে স্বাভাবিক বিকাশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। খেলার মাঠের মতই নগর এলাকায় তিন ধরনের পার্কের পরিকল্পনা করতে হয়। সেগুলো হলো নেইবারহুড পার্ক, কমিউনিটি লেভেল পার্ক, আরবান বা সিটি পার্ক। আমাদের দেশের নগর পরিকল্পনায় এই ধরনের শ্রেণিভিত্তিক পার্ক পরিকল্পনা দেখা যায় না। ফলে বিশাল জনসংখ্যার এই ঢাকা মহানগরীতে বিভিন্ন শ্রেণির পার্ক ও গণপরিসরের তীব্র সংকট আছে।

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর