২১ অক্টোবর, ২০২৩ ১৮:৪২

‘রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া দেশে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া দেশে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়’

আজ শনিবার সিরডাপ মিলনায়তনে ‘কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন, রাজনৈতিক দল ও মিডিয়ার ভূমিকা এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক্সেস টু জাস্টিস প্রোগ্রামে বক্তারা

বিচারপতি ব্যারিস্টার শেখ হাসান আরিফ বলেছেন, ‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও সদিচ্ছা ছাড়া কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। শুধু আইনের কঠোরতা দিয়ে কিশোর গ্যাং সংকট উত্তরণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।এর নেপথ্যে মদদ-দাতাদের চিহ্নিত করে তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। সাথে সাথে ঢাকাসহ সারা দেশে কিশোর গ্যাংয়ের উত্থান রোধে প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, মিডিয়া, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে যুগপৎ ভূমিকা পালন করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে আধুনিক শিশু-কিশোরবান্ধব সংশোধন বা কারেকশন ব্যবস্থা। গ্যাং কালচার নিয়ন্ত্রণে এর কারণ চিহ্নিত করে তা নির্মূলের ব্যবস্থা নিতে হবে।’ 

আজ শনিবার ঢাকা মহানগরীর তোপখানা রোডে সিরডাপ মিলনায়তনে ‘কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন, রাজনৈতিক দল ও মিডিয়ার ভূমিকা এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক্সেস টু জাস্টিস প্রোগ্রামের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন বিএইচআরএফ।

বিচারপতি ব্যারিস্টার শেখ হাসান আরিফ আরো বলেন, ‘খারাপ সংবাদ যেভাবে প্রচার পায়, ভালো সংবাদ সেভাবে প্রচার হয় না। টিকটক, সোশ্যাল মিডিয়ায় সঠিক নজরদারীর দায়িত্ব বিটিআরসির। তারা তা করছে না। রাজনৈতিক উঠতি নেতা পাতি নেতারা টাকা পয়সা দিয়ে কিশোরদের ব্যবহার করে নিজের জনপ্রিয়তা ও পাওয়ার দেখানোর জন্য। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া পুলিশ, বিচারক, প্রশাসন, মিডিয়া কাউকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।

বিএইচআরএফ চেয়ারপারসন মানবাধিকার নেত্রী অ্যাডভোকেট এলিনা খানের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএইচআরএফ মহাসচিব অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান, মুখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদের শিক্ষক ও সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিসের পরিচালক প্রফেসর হাফিজুর রহমান কার্জন।

অতিথি হিসেবে আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়াম্যান ও এটিএন বাংলার নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরন, সিনিয়র ক্রাইমস রিপোর্টার পারভেজ আহমেদ। 

ধন্যবাদ বক্তব্য রাখেন বিএইচআরএফ ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি রোটারিয়ান এম রাকীব সরদার ও সহ-সাধারণ সম্পাদক সাদাত আর খান। 

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ফরেনসিক চিকিৎসক ডা. শাহ আলম, এডিসি (ডিএমপি তেজগাঁ) রুবাইয়াত জামান, এডিসি (প্রশাসন) রকিবুল ইসলাম, ডিআইজি প্রিজন নাহিদা পারভিন, এডিসি (ডিএমপি) একেএম সাজ্জাদুল আলম, এডিসি সানজিদা চৌধুরী, সুজন সমন্বয়ক দীলিপ কুমার সরকার, বৈশাখী টিভির সাংবাদিক তানজিনা নিঝুম, সাংবাদিক আরিফুর রহমান, মানবাধিকার কর্মী তাহমিনা বিনু, এম মাসূম সর্দার, কবি আঞ্জুমান আরা আরজু, টিচার্স ট্রেইনার মুমু আহমেদ, ডা আব্দূস সালাম ওসমানী, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ হারুন, অ্যাডভোকেট অংশু আসিফ পিয়াল প্রমুখসহ বিপুলসংখ্যক বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধি। 

‘কিশোর অপরাধ বন্ধ করতে সভায় পেশকৃত ১৫ দফা সুপারিশমালায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মতো ‘জাতীয় শিশু কিশোর অধিকার সূরক্ষা কমিশন’ গঠনের দাবি করা হয়। এসব সুপারিশমালা বাস্তবায়নের সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে পাঠানো হবে।

সভায় বক্তারা বলেন, ‘সাইবার ওয়ার্ল্ডেও কিশোর গ্যাং এর সরব উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। খেলার মাঠ ও বিনোদনের জায়গা কেড়ে নিয়েছে ছোট্ট একটা এন্ড্রয়েড  মোবাইল স্ক্রিন, যা আমাদের সন্তানদের অকর্মা, অসুস্থ মানসিক বিকারগ্রস্ত করে তুলছে।’ 

বক্তারা বলেন, ‘কিশোর গ্যাংয়ের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করতে হবে। বিশেষ করে আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোকে অঙ্গীকার করতে হবে, তারা কোনো শিশু-কিশোরকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করবে না।’

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর