সিলেটে রমজান ও ঈদকে কেন্দ্র করে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন হুন্ডি ব্যবসায়ীরা। কয়েক দিনে নগরীতে হুন্ডির টাকা ছিনতাই ও পুলিশের মাধ্যমে উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, হুন্ডির বেশিরভাগ টাকা আসছে সৌদি আরব, আমেরিকা ও ইংল্যান্ড থেকে। এ ছাড়া দুবাই, কাতার, মালয়েশিয়া, ওমান, কুয়েত, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন থেকেও হুন্ডির মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে টাকা আসছে। প্রবাসে অবৈধভাবে বসবাসকারীরা ব্যাংকিং সেবা নিতে না পেরে দেশে টাকা পাঠাতে হুন্ডি ব্যবসায়ীদের দ্বারস্থ হন। এ ছাড়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা হুন্ডি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ নিয়েও ঈদে দেশে টাকা পাঠিয়ে থাকেন। জানা যায়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সিলেটে হুন্ডির টাকা লেনদেন হয় বিভিন্ন ট্রাভেলস এজেন্সির আড়ালে। সুরমা মার্কেট, জিন্দাবাজার, তালতলার কয়েকটি ট্রাভেল এজেন্সি, লালদিঘীরপাড়, কালিঘাট, মহানজনপট্টি, করিমউল্লাহ, হাসান মার্কেটের কিছু ব্যবসায়ীও এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। শহরের বাইরে দক্ষিণ সুরমা ও বিয়ানীবাজার উপজেলায়ও হুন্ডি ব্যবসায়ীদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, সিলেট বিভাগে অনুমোদনপ্রাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৪টি। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ১৩টি ও একটি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে। তবে মুদ্রা লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খোদ নগরীতেই এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন শতাধিক অবৈধ ব্যবসায়ী। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রমজান মাস শুরু হওয়ার আগ থেকেই হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন বেড়েছে। এতে বাড়ছে ছিনতাইয়ের ঘটনাও। গত এক সপ্তাহে নগরীতে হুন্ডির প্রায় ৬০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। একটি মাইক্রোবাসযোগে বিয়ানীবাজার থেকে সিলেট আসার পথে শাহজালাল সেতুতে ৪০ লাখ টাকা ও নাইওরপুল ফোয়ারা পয়েন্টে ২০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ছিনতাইকারীরা প্রকাশ্যে অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা ছিনিয়ে নিলেও এসব ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি। এদিকে গত ২৯ জুন সন্ধ্যার পর নগরীর তালতলা থেকে ডিবি পুলিশ হুন্ডির টাকাসহ এক ব্যক্তিকে আটক করে। এ সময় তার কাছ থেকে নগদ চার লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। তবে পুলিশ চার লাখ টাকা উদ্ধার দেখালেও ওই ব্যক্তির কাছে প্রায় ২ কোটি টাকা ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার নুরে আলম বলেন, হুন্ডি, ছিনতাইসহ বড় ধরনের অপরাধ দমনে ১২ সদস্যের 'লায়ন্স টিম' গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে হুন্ডির চার লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। হুন্ডি রোধে পুলিশের বিশেষ নজরদারি রয়েছে। এ ব্যবসার নেপথ্যে যারা রয়েছে তাদেরও শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।