দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিলেও প্রার্থীদের আচরণবিধি পরিবর্তন বা সংশোধনের কোনো প্রয়োজন নেই। বর্তমান যে আচরণবিধি আছে সেটা দিয়েই ভালো নির্বাচন করা সম্ভব। লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করতে বর্তমান আচরণবিধি বহাল রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদা।
গত মঙ্গলবার বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন নিউজে টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন। টকশো সঞ্চালক মুনি্ন সাহার প্রশ্নের জবাবে শামসুল হুদা বলেন, নির্বাচন কমিশন নিজেরাই গেজেটে প্রজ্ঞাপন দিয়ে আচরণবিধি তৈরি করতে পারে। বর্তমানে যেসব আচরণবিধি আছে তা যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যবহার করা যায়। কমিশন আচরণবিধি সংশোধনের যে উদ্যোগ নিয়েছে বলে শোনা যায় তা নির্বাচনে লেভেল প্লেইং ফিল্ড নষ্ট করবে। তিনি বলেন, দলের অধীনে সরকারপ্রধান সুবিধা নিতে পারবেন তবে নিজের প্রচারণায়। তিনি অন্য কারও প্রচারণায় সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিতে পারবেন না। স্পিকারও প্রোটোকল ব্যবহার করবেন না। আমরা কমিশনে থাকতে এরকম অনেক আচরণবিধি বন্ধ করেছিলাম। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এতে খুব প্রভাব পড়ে না। যেহেতু প্রতিপক্ষ মনে করে, থানার পুলিশ, ওসি তাদের বিশেষ সুবিধা দেয়। সেটা একটি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে বলে বিরোধী পক্ষ মনে করে। মানুষ এটা দেখে ভোট দেয় না। সাবেক সিইসি বলেন, নির্বাচনে আচরণবিধি পালনে বাধ্যবাধকতা হচ্ছে শিডিউল ঘোষণা থেকে রেজাল্ট পর্যন্ত। ধর্মের ব্যবহারের ক্ষেত্রে কমিশন ওই সময় ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে নির্বাচনের আগে বা সারা বছর যেসব প্রচার প্রচারণা হয় সেখানে কমিশনের কিছু করার নেই। তাই ধর্মের ব্যবহার বন্ধ করতে সারা বছর রাজনৈতিক দলের আচরণ মনিটরিং করা ও নিয়ন্ত্রণ করার কোনো পদ্ধতি নেই। ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করাও এক্ষেত্রে সমাধান নয়। খালেদা জিয়ার এক বক্তব্য উল্লেখ করে সাবেক সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশন অথর্ব প্রধান রাজনীতিকদের এমন মন্তব্য বিব্রতকর। এসব কথা বলার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। এটা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য মন্তব্য। এই কমিশন অথর্ব কিনা তাদের খুঁজে বের করা উচিত। যদি অথর্ব হয় তাহলে যারা কমিশনে গিয়েছেন তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড বের করা উচিত। এই লোকগুলো অথর্ব কিনা তা দেখা উচিত।
তিনি বলেন, নির্বাচনে সেনা মোতায়েন অনেক দেশেই হয় না। ভারতে কোনোদিনই সেনা মোতায়েন হয় না। স্বাভাবিকভাবে কেন্দ্রীয় পুলিশ মোতায়েন হয়। সেখানে অনেক ভুলভ্রান্তি হয়। কখনো সেখানে কমিশনকে গালমন্দ করে না। তবে কমিশন মেরুদণ্ডহীন হয় যখন নিয়োগপ্রাপ্তরা যোগ্য নয়, কিংবা কোনো দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। এরকম ঘটনা তো নেই।ভোট ডাকাতি করা, জাল ভোট দেওয়া এখন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। শক্তি প্রয়োগ করে বুথ দখল করতে পারে। সেক্ষেত্রে কমিশন ভোট বন্ধ করে দেয়। যদি ঝামেলা হয় সেটা তো কমিশন করে না। করে রাজনৈতিক কর্মী প্রার্থীরা।