প্রতি বছরের মতো এবারও দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভিকারুননিসা নূন কলেজের মাঠের নোটিস বোর্ডে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল। অবশ্য উদ্বিগ্ন ফলপ্রত্যাশীরা এর আগে থেকেই মাঠে অপেক্ষা করছিলেন। আর ফলাফল প্রকাশের ঠিক পর পরই গোটা মাঠ প্রাঙ্গণ যেন সাদা-আকাশি ইউনিফর্ম পরিহিত উচ্ছল তরুণীদের আনন্দ-উল্লাসের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়ে ওঠে।
ফলাফল প্রকাশের আগে গতকাল সকাল থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে ফলপ্রার্থী ও অভিভাবকরা আসতে শুরু করেন। ফল প্রকাশের পর মাঠজুড়ে শুরু হয় উল্লাস। বাদ্যের তালে গোল হয়ে নেচে-গেয়ে কৃতী শিক্ষার্থীরা আনন্দে মেতে ওঠেন। নিজের কৃতিত্ব ও সাফল্যে আবেগ ধরে রাখতে না পেরে অনেকে অভিভাবক ও বন্ধুদের জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন। উচ্ছ্বাস প্রকাশে তারা বাতাসে ফোম স্প্রে করেন। 'ভি' চিহ্ন দেখিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে ছবি তোলেন।
এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে সারা দেশে মেয়েদের মধ্যে প্রথম এবং সম্মিলিত মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। গত দুই বছর এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি উচ্চ মাধ্যমিকে সম্মিলিতভাবে চতুর্থ স্থান অর্জন করলেও এবার এক ধাপ এগিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। এ বছর ভিকারুননিসা থেকে ১ হাজার ৩৭৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে অসুস্থতার কারণে পরীক্ষার আগে ঝরে পড়েন দুজন। বাকিরা সবাই উত্তীর্ণ হয়েছেন। সে কারণে এ বছর কলেজের উত্তীর্ণের হার ৯৯.৮৫ শতাংশ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৩২ জন। শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক পাঁচটি মানদণ্ডের সূচকে কলেজটি ৯২.৫২ পেয়েছে। ফলাফলে সন্তুষ্ট ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ মঞ্জু আরা বেগম বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ ফল অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। তিনি জানান, গত দুই বছর চতুর্থ স্থান অর্জন করার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সবার মধ্যেই ভালো ফল অর্জনের প্রচেষ্টা ছিল, যে কারণে এ বছর এক ধাপ এগিয়ে এসেছে। তবে ফল আরও ভালো হতে পারত এমন দাবি করে তিনি আশাতীত ফলাফল অর্জন না করার জন্য রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে দায়ী করেন। ব্যবসায় শিক্ষা থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌসি বলেন, ফলাফলে তিনি খুব খুশি। তার ইচ্ছা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পছন্দের বিষয়ে ভর্তি হবেন।