শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০১৪ ০০:০০ টা

সিলেটে জামায়াত ঠেকাতে মরিয়া আওয়ামী লীগ-বিএনপি

সিলেটে জামায়াত ঠেকাতে মরিয়া আওয়ামী লীগ-বিএনপি

তৃতীয় দফা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল। এ উপজেলায় নির্বাচন নিয়ে বিরোধ বেড়েছে ১৯ দলীয় জোটের শরিক বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে। জামায়াত নেতা মাওলানা লোকমান আহমদ ১৯ দলীয় জোটের সমর্থন পেলেও তা মেনে নিতে পারেননি বিএনপি নেতা-কর্মীরা। মাওলানা লোকমানকে ধরাশায়ী করে বিজয় ছিনিয়ে নিতে নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে রয়েছেন বিএনপির প্রভাবশালী প্রার্থী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আহমদ ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এটিএম ফয়েজ। আর আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু জাহিদ। রাজনীতির মাঠে সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান হলেও নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির উদ্দেশ্য 'জামায়াতের প্রার্থী লোকমান ঠেকানো'। বিশেষ করে জোটের নেতৃত্বাধীন দল বিএনপি নেতা-কর্মীদের শক্ত বিরোধী অবস্থানের কারণে ১৯ দলের সমর্থন নিয়েও অনেকটা বেকায়দায় পড়েছেন জামায়াত নেতা মাওলানা লোকমান। দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের সঙ্গে আলাপ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান হওয়ার সুবাদে ১৯ দলীয় জোটের সমর্থন আদায়ে সমর্থ হন জামায়াত নেতা মাওলানা লোকমান আহমদ। কিন্তু সরকার বিরোধী বিগত আন্দোলনে তার নিষ্ক্রিয়তা ও বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে অাঁতাত করে চলার অভিযোগ ওাায় জোটের এই সমর্থন মেনে নিতে পারেননি বিএনপি নেতা-কর্মীরা। স্থানীয় সমর্থন নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আহমদ। এ ছাড়া প্রার্থী হিসেবে বিএনপির আরেক প্রার্থী দক্ষিণ সুরমা  উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এটিএম ফয়েজও মাঠে রয়েছেন। শুরু থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা জোট সমর্থিত প্রার্থী লোকমান আহমদকে ছেড়ে দুই প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নামেন। অভিযোগ রয়েছে- ভোটের মাঠে সুবিধা করতে না পেরে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিনকে দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী আলী আহমদ ও এটিএম ফয়েজকে বহিষ্কার করায় জামায়াত। বিনিময়ে সিলেট সদর উপজেলায় শমসের মবিনের আস্থাভাজন বিএনপির প্রার্থী আবুল কাহের শামীমের পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্র“তি দিয়ে দলের প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে নেয় জামায়াত।
কিন্তু আলী আহমদ ও এটিএম ফয়েজের বহিষ্কারাদেশ স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। বরং মাওলানা লোকমানকে ধরাশায়ী করে জামায়াতের এই কূটকৌশলের জবাব দিতে বিএনপি নেতা-কর্মীরা আরও উজ্জীবিত হয়ে আলী আহমদের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন।
দক্ষিণ সুরমা বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাদের একটাই উদ্দেশ্য মাওলানা লোকমানকে আটকানো। বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হতে না পারলেও জামায়াতের প্রার্থী যাতে জয়ী হতে না পারেন সে জন্য নেতা-কর্মীরা সজাগ রয়েছেন। অপরদিকে গত নির্বাচনে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হওয়া আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আবু জাহিদের পক্ষে জেলা ও মহানগরের নেতারাও মাঠে নেমেছেন। রাত দিন তার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। নির্বাচনে অন্য যে কোনো প্রার্থীর মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা আবু জাহিদের সঙ্গেই হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।
 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর