মুজিবনগর দিবসকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরীর ছেলে কলিন্স ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে ব্যাপক চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। তারা এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের ফোনে চাঁদা দাবি করছেন। এ খাতে কোনো তহবিল না থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা বিপাকে পড়েছেন। তারা এক দিকে যেমন চাঁদার টাকাও জোগাড় করতে পারেননি, তেমনি প্রভাবশালী এমপিপুত্রের বিরুদ্ধে মুখও খুলতে পারছেন না। অবশ্য এমপির ছেলে ইমরান চৌধুরী ওরফে কলিন্স বলেন, বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা আমাদের সঙ্গে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছে। তবে চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। জানা যায়, আগামী ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে মেহেরপুরের আম্রকাননে আওয়ামী লীগের আয়োজনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের এমপি রেজাউল হক চৌধুরীর সমর্থিত কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এ জন্য প্রায় ১০০ যানবাহন লাগবে। এসব পরিবহন খরচ বাবদ গত কয়েক দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন স্কুল ও এলাকার বিত্তবানদের কাছে একটি মোবাইল নম্বর (০১৭২৬২৭৪১২৫) থেকে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে। ওই নম্বর থেকে ফোন করে জানানো হচ্ছে, 'এমপির দফতর থেকে মজনু বলছি। মুজিবনগরে যেতে গাড়ি ভাড়ার জন্য কিছু টাকা লাগবে। সময়মতো পেঁৗছে দেবেন, টাকা না দিলে খবর আছে।' এরকম ৫-৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক নামপ্রকাশ না করার শর্তে তাদের কাছে চাঁদা চাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। গত শনিবার আধা ঘণ্টার ব্যবধানে ওই মোবাইল নম্বর থেকে তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানকে ফোন করে টাকা চাওয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, এমপিপুত্র ও তার সহযোগীরা প্রতিদিন ফোন দিচ্ছে টাকার জন্য। এসব অনুষ্ঠানের জন্য বিদ্যালয়ে কোনো বরাদ্দ নেই। কিন্তু এমপির লোকজন অব্যাহত ভাবে চাপ দিচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার এক ব্যবসায়ী জানান, কয়েকদিন আগে ফোন দিয়ে টাকা চাওয়া হয়েছে। উপায় নাই কিছু টাকা দিতে হবে। দৌলতপুর উপজেলার শতাধিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে এ ভাবে চাঁদা চাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে ছেলের চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল হক চৌধুরী এমপি বলেন, 'এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। আমি তো ঢাকাতে আছি। বাড়ি না গিয়ে কিছু বলতে পারব না। আর টাকা দেবে কেন। ছেলে তো বাড়ি থাকে। ছেলের নামে তো অন্য কেউ চাঁদা চাইতে পারেন। আপনি এসব পেপারে দেবেন না।' এমপির ছেলে ইমরান চৌধুরী ওরফে কলিন্স বলেন, বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা আমাদের সঙ্গে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছে। তবে চাঁদা চাওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। তবে ফোন করে চাঁদা দাবিকারী মজনু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এমপিপুত্রের নির্দেশেই তিনি চাঁদা চাইছেন।