বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৪ ০০:০০ টা

চসিকের আয়তন বাড়ানোর সিদ্ধান্তে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা

শেষ মুহূর্তের এ উদ্যোগে নানা প্রশ্ন

চসিকের আয়তন বাড়ানোর সিদ্ধান্তে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা

নির্বাচনের আট মাস আগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) আয়তন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। এ সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে নতুন বিতর্ক কিংবা আইনি জটিলতা তৈরির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে করে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। প্রসঙ্গত, সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন বর্তমানে স্থগিত আছে। আইনি জটিলতা তৈরি হলে চসিককে ঢাকার ভাগ্যও বরণ করতে হতে পারে বলে মত সংশ্লিষ্টদের। চসিক সূত্রে জানা যায়, নগরীর আয়তন ৬০ থেকে ১২০ বর্গকিলোমিটারে উন্নীতের সিদ্ধান্ত নেয় চসিক। চসিকের ৫০তম সাধারণ সভায় কাউন্সিলর জহর লালহাজারীর প্রস্তাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় এটি বাস্তবায়নে প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ হোসেনকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। চসিক মেয়র মনজুর আলম বলেন, নগরবাসীর স্বার্থে সীমানা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে নাগরিকদের নানা সুযোগ-সুবিধা বাড়বে। সবার সঙ্গে আলোচনা ও সম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি বলেন, সীমানা বাড়ানো নিয়ে আইনি জটিলতা থাকবে না। আমরা বিষয়টিকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছি। আর আইনি জটিলতা দেখা দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 'নির্বাচন সামনে রেখে কেন এই উদ্যোগ' এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এতদিন কেউ এ দাবি না করায় এটি আলোচনায় আসেনি। প্রস্তাব বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ হোসেন বলেন, আমরা এখনো কাজ শুরু করিনি। তবে দুয়েকদিনের মধ্যে আমরা বসে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব। সীমানা বাড়ানোর প্রস্তাবকারী কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী বলেন, বর্তমানে নগরীর ৮, ২৪ ও ৩৯ নং ওয়ার্ডে ভোটার বেশি। ফলে প্রতিটি ওয়ার্ডকে দুই ভাগে ভাগ করার প্রস্তাব করেন সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলররা। সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে নগরীর এ তিন ওয়ার্ডকেও বিভক্ত করা হবে। জানা যায়, ১৯৯৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম আবদুল হাই স্বাক্ষরিত গেজেটে সীতাকুণ্ডের ৩টি, হাটহাজারীর ৫টি, পটিয়ার ৬টি, বোয়ালখালীর ১টি ও আনোয়ারার ৩টি ইউনিয়নকে নগরীর সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়। তবে পরবর্তীতে এ প্রজ্ঞাপন বাতিল হয়ে যায়। এরপর ২০০৯ সালে সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী আবারও উদ্যোগ নেন। ওই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি পুরনো ব্রিজ ঘাটে সমাবেশের মাধ্যমে পটিয়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নকে সিটি করপোরেশন ঘোষণা করেন।

কিন্তু পরবর্তীতে বোয়ালখালী ও হাটহাজারীর পক্ষে এর বিরুদ্ধে মামলা করলে প্রক্রিয়াটি স্থগিত হয়ে যায়। এরপর বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলমের আমলে এ নিয়ে কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। তবে গত বছরের ২৩ অক্টোবর চসিক থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে 'সীমানা সম্প্রসারণ সম্পর্কিত প্রতিবেদন' শীর্ষক একটি চিঠি পাঠান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আহমদ। ফলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিষয়টি আবার সামনে আসে। কিন্তু বর্ধিত এলাকার সংক্ষুব্ধ কোনো নাগরিক এর বিরুদ্ধে মামলা করলে আদালত আসন্ন নির্বাচনে স্থগিতাদেশ দিতে পারেন বলে মনে করে অভিজ্ঞমহল। নাম প্রকাশ না করে তারা বলেন, কেউ ক্ষুব্ধ হয়ে মামলা করলেই নির্বাচন স্থগিত। তখন চসিককে ঢাকার ভাগ্য বরণ করতে হবে।

জানা যায়, ২০১০ সালের ১৭ জুন নির্বাচনের পর প্রথম সাধারণ সভা হয় ২৬ জুলাই। নিয়ম মতে প্রথম সাধারণ সভা থেকেই মেয়রের কার্যকাল শুরু। আগামী বছরের ২৬ জুলাইয়ের আগের তিন মাসের (মে-জুলাই) মধ্যে চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। উপরন্তু নির্বাচন কমিশনার মোবারক হোসেন গত ৭ আগস্ট চট্টগ্রাম অফিস পরিদর্শনকালে আগামী মে-জুলাইয়ের মধ্যে চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে সাংবাদিকদের বলেন।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর