শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

‘ব্যক্তিস্বার্থে দেশ ও প্রবাসের সাংবাদিকরা বিভক্ত’

‘ব্যক্তিস্বার্থে দেশ ও প্রবাসের সাংবাদিকরা বিভক্ত’

নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে মঙ্গলবার রাতে আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম -বাংলাদেশ প্রতিদিন

‘ব্যক্তিস্বার্থে দেশ ও প্রবাসের সাংবাদিকরা আজ বিভক্ত হয়ে গেছেন। তারা ঐক্যবদ্ধ না হলে পেশাগত অধিকার সুরক্ষা যেমন সম্ভব হবে না, তেমনি দেশের কল্যাণে ভূমিকা রাখা যাবে না। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে গণমাধ্যম কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ নিউইয়র্কে কর্মরত সাংবাদিক ও সুধীজনের মুক্ত আলোচনায় এমন অভিমত ব্যক্ত করেন বক্তারা।
মঙ্গলবার রাতে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের পালকি পার্টি সেন্টারে আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের সাহিত্য ও সাংবাদিকতা’ শীর্ষক ওই সেমিনারে অতিথি বক্তা ছিলেন জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক ও দৈনিক কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন এবং বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম। সভাপতিত্ব করেন ক্লাবের সভাপতি নাজমুল আহসান। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক দর্পণ কবির ও যুগ্ম-সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন লেখক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব বেলাল বেগ, সাংবাদিক আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু, মঈনুদ্দিন নাসের, লাবলু আনসার, কাজী শামসুল হক, আহমেদ মূসা, শরীফ শাহাবুদ্দিন, মুজাহিদ আনসারী, মীর শিবলী, তাওহীদুল ইসলাম, সঞ্জীবন কুমার, বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাঈদ রহমান মান্নান ও তারেক হাসান। সেমিনারে ছড়া পাঠ করেন ছড়াকার মনজুর কাদের। বক্তারা বলেন, বিএনপি সরকারের তথ্যমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার সময়ই বাংলাদেশের সাংবাদিক ইউনিয়নে বিভক্তি এসেছে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। দেশ ও জাতির কল্যাণে সব স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সাংবাদিকদের এক প্লাটফর্মে দাঁড়াতে হবে। সেমিনারে ধিক্কার জানানো হয় বরখাস্তকৃত মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীকে। অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার করে প্রচলিত আইনে বিচারের আওতায় আনার দাবিও তোলেন বক্তারা। সাংবাদিকদের মধ্যে অনৈক্য থাকলে তা সমাজের জন্য ক্ষতিকর- এমন মত দিয়ে ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘যখনই সাংবাদিক সমাজকে বিভক্ত হতে দেখেছি তখনই আমার মনে হয়েছে যে, দেশ সর্বনাশের পথে ধাবিত হচ্ছে। দেশে আজ মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, লেখক-সাহিত্যিকরা ভাগ হয়ে যাচ্ছেন। এটা দুর্ভাগ্যজনক। সাংবাদিক ও সাহিত্যিক দুজনই বিবেক নিয়ে কাজ করেন। তারা সমাজ তথা রাষ্ট্র বিনির্মাণে অবদান রাখেন। তাই তাদের একসঙ্গে থাকতে হবে।’ ইমদাদুল হক মিলন আরও বলেন, ‘সাংবাদিকরা সমাজের বিবেক। তবে এখন তা অনেকটা নষ্ট হয়ে গেছে। যখন মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, সাহিত্যিক-সাংবাদিকদের বিভিন্ন রাজনৈতিক ছায়াতলে বিভক্ত হতে দেখি, তখন আমি বুঝি আমাদের বড় ক্ষতি হয়ে গেল। আজকের দিনে সেই সাহসী সাংবাদিকতা আর দেখি না।’ নঈম নিজাম অনৈক্যের জন্য বাংলাদেশের কয়েকজন সাংবাদিক নেতাকে দায়ী করে বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন যারা ইউনিয়ন সাংবাদিকতা তথা নেতৃত্ব দেন তাদের অনেকেই কখনই সাংবাদিকতা করেননি। কেউ কেউ অখ্যাত পত্রিকার সাংবাদিক। তাদের জন্য আমাদের ঐক্য হচ্ছে না। তারা ইউনিয়নের নেতা হয়ে বিরোধ জিইয়ে রাখেন।’ তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ না হলে পেশাগত অধিকার সুরক্ষা করা সম্ভব হবে না। আর এ ঐক্য তখনই সম্ভব যখন আমরা সবাই ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠতে সক্ষম হব।’ ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘একটি বিচিত্র সমাজে আমরা বসবাস করছি। বাংলাদেশকে বদলে দেওয়ার জন্য আমাদের সৃজনশীল কিছু সাহসী মানুষ দরকার। সে কাজটি করতে পারেন সাংবাদিকরা।’

নঈম নিজাম বলেন, বাংলাদেশের সাহিত্য ও সাংবাদিকতা দুটি বিষয় গভীরভাবে জড়িত। নানা মত ও পথ থাকবে। কিন্তু দেশের সংবিধান এবং চেতনার সঙ্গে কোনো বিরোধ থাকবে না। আমেরিকা যখন ইরাক বা আফগানিস্তানে যুদ্ধে যায়, তখন এখানকার মূল পত্রিকাগুলো সেসব দেশের নিরীহ মানুষের কথা বিস্তরভাবে লিখতে পারে না।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রথিতযশা ফটোসাংবাদিক আজিজুর রহিম পিউর অকালমৃত্যুতে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর