শিরোনাম
রবিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা
২০ দলের অবরোধ হরতাল

স্কুলগুলোয় অস্বাভাবিক অবস্থা

বিএনপিসহ ২০-দলীয় জোটের টানা অবরোধ কর্মসূচির কারণে পাল্টে গেছে রাজধানীসহ দেশের বিভাগীয় ও জেলা শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর চিত্র। সকালবেলা সন্তানকে নিয়ে অভিভাবকদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার তাড়া আর এখন নেই। স্কুল খুলে ঘণ্টা বাজিয়ে জাতীয় সংগীতের জন্য শিক্ষার্থীদের নেই ব্যস্ততা। শিক্ষকরা কষ্ট আর ভোগান্তি পেরিয়ে স্কুলে গেলেও শিক্ষার্থীরা যায় না। শিক্ষায়তনে এ যেন অঘোষিত ছুটি। অভিভাবকরাই সন্তানদের বাধা দিচ্ছেন স্কুলে যেতে। ঘরের বাইরে বের না হতে। তাদের ভয়, যে কোনো মুহূর্তে হরতাল-অবরোধের আগুনে পুড়ে অথবা ককটেল-বোমাবাজিতে জীবন বিপন্ন হতে পারে। আতঙ্ক আর অস্থিরতায় প্রতিনিয়তই কমছে স্কুলমুখী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা। শিক্ষাদান ছাড়াও মেধা বিকাশের অন্যান্য কর্মকাণ্ড বন্ধ হওয়ায় হতাশ স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকরা। রাজধানীর স্কুলগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ঘড়ির কাঁটা বেলা ১২টার ঘরে যাওয়ার আগেই শ্রেণিকক্ষের পরিবর্তে বিদ্যালয়ের আঙিনায় শিক্ষার্থীরা। তাও সংখ্যায় নগণ্য। নতুন বছরে নতুন বইয়ের গন্ধে যাদের উচ্ছ্বসিত হওয়ার কথা তারাই এখন বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে বাসাবাড়িতে খেলাধুলায়। নিয়মিত ক্লাস না হওয়ায় আসন্ন পরীক্ষা নিয়েও চরম হতাশ। টানা অবরোধের কারণে অনেকটাই ভেঙে পড়েছে নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্যালেন্ডারের চিরচেনা হিসাব-নিকাশ। আর এক মাস পরই অনেক স্কুলে নেওয়া হবে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা।

শিক্ষার্থীরা বলে, 'আমাদের সামনে পরীক্ষা, প্রস্তুতি দরকার। কিন্তু আমাদের বেশির ভাগ ক্লাসই হচ্ছে না। আমরা কোচিংয়েই বা কতটুকু পড়তে পারি। স্কুলে এসে আমরা খেলাধুলা করছি, এর সঙ্গে যদি ক্লাসও হতো তাহলে আমাদের আরও ভালো হতো।' চাকরি বাঁচানোর তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষকরা আসেন, শিক্ষার্থীরা আসে না। ফলে দেশের অধিকাংশ স্কুলেই শিক্ষাদান প্রায় বন্ধ। যেসব স্কুলে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে সেখানে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার শতকরা ১৫ থেকে ২০ ভাগ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা স্কুলে আসছে, বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত চরম দুশ্চিন্তায় তাদের অভিভাবকরাও। শিক্ষার্থীরা আরও বলে, 'পরীক্ষা তো সময়মতোই হবে, যদি এখন ঠিকমতো ক্লাস না করতে পারি তাহলে আমাদের রেজাল্ট খারাপ হয়ে যাবে। নতুন বই পেয়ে আমরা খুশি হয়েছিলাম। অবরোধ আমাদের আনন্দ নষ্ট করে দিয়েছে। আমরা খুব কষ্টে আছি।' এক অভিভাবক বলেন, নিয়মিত ক্লাস হলে ছেলেমেয়েরা ভালো লেখাপড়া করে। ক্লাস ঠিকমতো না হলে বাসায় ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে না। এই বাস্তবতায়, মেধা বিকাশে বছরের শুরুতে ভিন্নধর্মী নানা আয়োজন থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হওয়ায় হতাশ প্রতিষ্ঠানপ্রধানরা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর