শিরোনাম
বুধবার, ২৭ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

বরখাস্ত হচ্ছেন ২৪ জনপ্রতিনিধি

হত্যা-সন্ত্রাস-নাশকতা মামলার আসামি তারা

মানুষ হত্যা, সন্ত্রাস, নাশকতা ও পুলিশের ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলার আসামি হয়েছেন রংপুর বিভাগে জামায়াত-বিএনপির এমন ২৪ জনপ্রতিনিধি সরকারের বরখাস্তের তালিকায় রয়েছেন। মামলার অভিযোগপত্র দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের বরখাস্ত করা হবে। ইতিমধ্যে জামায়াতের পাঁচ উপজেলা চেয়ারম্যান এবং পৌরসভার এক মেয়রকে বরখাস্ত করার পর অন্যরাও বরখাস্ত আতঙ্কে ভুগছেন। তবে পদ টিকিয়ে রাখতে অনেকেই ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় সংসদ সদস্য ও নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা করে চলছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার সচিব আবদুল মালেক বলেন, আইনের বিধান অনুযায়ী মানুষ হত্যা, সন্ত্রাস ও নাশকতার মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত জনপ্রতিনিধিদের সাময়িক বরখাস্ত করা হচ্ছে। রংপুর বিভাগের এমন জনপ্রতিনিধিদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা পেলেই তাদের বরখাস্ত করা হবে।

রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রংপুর বিভাগের আট জেলায় ৫৮টি উপজেলার মধ্যে ২৪টিতে বিএনপি, ৮টিতে জামায়াত নেতারা উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া ২৬টি পৌরসভার মধ্যে ১০টিতে বিএনপি ও ২টিতে জামায়াত নেতা মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় ঘোষণার পর দেশজুড়ে ব্যাপক নাশকতা চালায় জামায়াত। এ ছাড়া গত বছরের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এবং চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের অবরোধ-হরতাল চলাকালে গাড়িতে পেট্রলবোমা হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যা, যানবাহন ভাঙচুর ও অগি্নসংযোগের মতো নাশকতার অভিযোগে জামায়াত-বিএনপির ৩০ জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ৫-৩১টি করে মামলা করা হয়। মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত হওয়ায় সম্প্রতি সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতের শূরা সদস্য আবুল কাওছার মো. নজরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান ও পলাশবাড়ী উপজেলা জামায়াতের আমির আবু তালেব সরকার, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আবদুল করিম, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাজেদুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সোলায়মান সরকার, সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জামায়াত নেতা নুরুন্নবী প্রামাণিক সাজুকে।

বরখাস্তের তালিকায় রয়েছেন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা চেয়ারম্যান উপজেলা জামায়াতের আমির গোলাম রব্বানী, ভাইস চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা আবদুল বাসেত মারজান, রংপুর সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাবেক ছাত্রশিবির ক্যাডার শাফিউল ইসলাম শাফি, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা জামায়াতের সদস্য শফিউল্লাহ শফি, আটোয়ারী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুর রহমান আবদার এবং ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা ফারুক কবীর আহমেদ, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জামায়াতের সাবেক উপজেলা আমির আফতাব উদ্দিন মোল্লা, একই উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নশরতপুর ইউপির চেয়ারম্যান ৩১ মামলার আসামি নূর এ আলম সিদ্দিকী, ঘোড়াঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা শাহ্ মুহাম্মদ শামীম হোসেন চৌধুরী, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তৈয়মুর রহমান, নীলফামারীর জলঢাকা উজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ সৈয়দ আলী। আলহাজ সৈয়দ আলী বলেন, জড়িত না থেকেও নাশকতার একাধিক মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। যে কোনো সময় বরখাস্ত হওয়ার আতঙ্কে আছেন তিনি। তবে পদ টিকিয়ে রাখতে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সঙ্গে মিলেমিশে চলছেন বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর