পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ, এখন থেকে নতুন রাস্তা করলে তা কংক্রিটে করতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য তা হচ্ছে না। ভবিষ্যতে কংক্রিটের রাস্তা তৈরি করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খরচ বাঁচাতে বিটুমিনের (পিচের) রাস্তা করছি। কিন্তু তা তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। হিসাব করলে দেখা যায়, কংক্রিটের চেয়েও পিচের রাস্তায় বেশি খরচ হচ্ছে। কেননা পিচের রাস্তায় নির্মাণ, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণে কংক্রিটের চেয়েও অনেক বেশি খরচ হয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, তিন কিলোমিটার রাস্তা করলেও অন্তত এক কিলোমিটার কংক্রিটে করা যেতে পারে বলে উদাহরণ দেন মন্ত্রী। রবিবার পরিকল্পনা কমিশনে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার খসড়ার ওপর আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাস্তা টেকসই করতে অনেকে কংক্রিটের রাস্তা তৈরির প্রতি জোর দেন। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর আগেও কোথাও গেলে সবাই বলত রাস্তা করে দেন। আর এখন বলে পাঁচটা বিদ্যুতের খুঁটি লাগিয়ে দেন। এটি নির্দেশ করে যে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সড়কগুলো কম সময়ে নষ্ট হয়ে যায় ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে। এ জন্য ওভারলোডেড ট্রাক চলাচল বন্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। কোন সড়কে কত টন পণ্যবাহী যান চলাচল করতে পারবে এর একটি মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে।’ এ সময় তিনি ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ভূ-উপরিভাগে পানির সংরক্ষণ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এ জন্য নদীগুলোর নাব্যতা বৃদ্ধিতে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন-প্রাথমিকভাবে কংক্রিটের রাস্তা নির্মাণে খরচ কিছু বেশি হলেও দীর্ঘ মেয়াদে এর সুবিধা অনেক। বাংলাদেশের আবহাওয়া অনুযায়ী এখানে বৃষ্টি বেশি হওয়ায় বিটুমিনের রাস্তা টেকে না। এ ছাড়া রাস্তায় ওভারলোড ও তাপমাত্রার বিষয়টিও রয়েছে। তাই বিটুমিনের বদলে কংক্রিটের রাস্তা এ অসুবিধাগুলো মোকাবিলা করতে পারবে বেশি। কংক্রিটের রাস্তার মেয়াদ বেশি। অর্থনৈতিক, পরিবেশগত ও সামাজিক প্রেক্ষাপটেও কংক্রিটের রাস্তা অনেক বেশি উপযোগী। এ ধরনের রাস্তার সংস্কার-ব্যয়ও কম।