শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০ টা

১০ বছরের মধ্যে সুন্দরবনের বাঘ বিলুপ্তির আশঙ্কা

১০ বছরের মধ্যে সুন্দরবনের বাঘ বিলুপ্তির আশঙ্কা

আগামী ১০ বছরের মধ্যে সুন্দরবনের বাঘ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বাঘ বিশেষজ্ঞ ড. আবদুল ওয়াদুদ। তিনি গবেষণা করে এমন তথ্য উদ্ঘাটন করেছেন। তিনি জানান, এক সময় সুন্দরবনে গণ্ডার ও বুনো মহিষ দেখা যেত। এখন সেসব অতীত স্মৃতি। তিনি আরও বলেন, দু-একদিনের মধ্যে তার গবেষণার তথ্য গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরা হবে। গত ১০ বছর ধরে সুন্দরবনে যাতায়াত করছেন এই বাঘ বিশেষজ্ঞ। বিলুপ্তের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, প্রথমত ছোট হয়ে আসছে আমাদের সুন্দরবন। এ কারণে বাঘের আবাসের এলাকাও কমে আসছে। পাশাপাশি কমছে তাদের নিরাপদে অবস্থানের স্থল এবং একই সঙ্গে খাবারের সংস্থানও। আবার এ প্রাণির হানা দেওয়া স্থানকে আমরা লোকালয় বলছি, সেটা এক সময়ে বনের প্রাণীদের আলয় ছিল। অবৈধ শিকারির কারণে বন্য প্রাণীর সংখ্যা দিন দিন কমছে। ফলে খাদ্য সংকটে ক্ষুধার জ্বালায় বাঘ লোকালয়ে হানা দেয়। সুন্দরবনের আশপাশের গ্রামের গৃহস্থের বড় সম্পদ গরু। নিজের জানের মতোই মূল্যবান। প্রাণিসম্পদ বাঁচাতে গ্রামবাসী দল বেঁধে পাহারা দেয়। প্রয়োজনে বাঘ মারতে অস্ত্র শানায়। এভাবে কয়েকটি বাঘ মারা পড়েছে। দ্বিতীয়ত, শৈশব থেকে জেনেছি বিশ্বের একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে বাঘ ও হরিণ শিকারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। মাত্র দশ মাসের ব্যবধানে বাঘের নয়টি চামড়া উদ্ধার করেছে পুলিশ ও র‌্যাব। ড. আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ২০১০ সালে বাঘ গণনায় দেখা যায়, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০। পাঁচ বছর পর সদ্যসমাপ্ত গণনায় দেখা যায় বাঘের সংখ্যা ১০৬। বছরে কমছে ৪৮ বাঘ। এই হিসাবে ১০ বছরের আগে সুন্দরবনের বাঘ বিলুপ্ত তালিকায় স্থান করে নিতে পারে। তৃতীয়ত, প্রতিটি বাঘের থাকে নির্দিষ্ট এলাকা। এই প্রাণি প্রশ্রাবের মাধ্যমে এলাকা চিহ্নিত করে। একটি বাঘ যে এলাকায় থাকে তার চারদিকের গাছপালায় প্রশ্রাব করে। এই প্রাণীর প্রশ্রাবে ফেরামিন নামক এক ধরনের কেমিক্যাল থাকে। গাছ-গাছালিতে ফেরামিনের গন্ধ নিয়ে ওই এলাকায় চলাচল করে।

কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জোয়ার-ভাটার কারণে গাছ-গাছালির প্রশ্রাব ধুয়ে যায়, ফলে ফেরামিনের গন্ধ নষ্ট হয়। তখন নিজের অজান্তে এক এলাকার বাঘ অন্য এলাকায় ঢুকে পড়ে। শুরু হয় মরণপণ লড়াই। এভাবেও কিছু বাঘ মারা যায়। ফলে এভাবে একের পর এক বাঘ নিহতের ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সুন্দরবন বিশেষজ্ঞরা।

 

সর্বশেষ খবর