ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদায় বাংলাদেশে গত শনিবার ১০ মহররম পবিত্র আশুরা পালিত হয়েছে। মুসলিম বিশ্বে কারবালার শোকাবহ ঘটনাকে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক হিসেবে পালন করা হয়। এই আশুরার দিনেই হিজরি ৬১ সনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) কারবালার প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করেছিলেন। তারই স্মরণে শিয়া সম্প্রদায় এই দিন রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরে তাজিয়া মিছিল বের করে। এ সময় তাজিয়া মিছিলে অনেক তরুণকে লোহার ধারালো গুচ্ছ পাত দিয়ে নিজেদের বুকে-পিঠে বারবার আঘাত করে ইমাম হোসাইন (রা.) শাহাদাতের অনুতাপ করে নিজেকে রক্তাক্ত করতে দেখা যায়। পবিত্র আশুরা উপলক্ষে দেশের মসজিদে মসজিদে মসজিদে কোরআন খানি, ওয়াজ, মিলাদ ও বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ওয়াজ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও এ উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করেছে। এ ছাড়া ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এ উপলক্ষে নফল রোজা রাখেন এবং দরিদ্রদের মধ্যে খাবার বিতরণ করেন। এদিন ছিল সরকারি ছুটি। রাজধানীতে হোসনি দালান রোড থেকে বেলা ১১টায় তাজিয়া মিছিল বের করা হয়। তাজিয়া মিছিল আজিমপুর, নিউমার্কেট হয়ে ধানমন্ডি ২ নম্বর সড়কে এসে শেষ হয়। হাসনি দালান ইমামবাড়া থেকে আরেকটি মিছিল বের হয়ে পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও পুরানা পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকা থেকেও তাজিয়া মিছিল বের হয়। তবে ৪০০ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো গত শুক্রবার মধ্যরাতে তাজিয়া প্রস্তুতিকালে ঢাকার হোসনি দালান এলাকায় বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে একজন নিহত ও প্রায় ১০০ জন আহত হয়েছেন। কিন্তু বোমা হামলার আতঙ্ক কাটিয়ে ঢাকার হোসনি দালান থেকে এবার একাধিক তাজিয়া মিছিল বের হয়েছে। এ ছাড়া খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেটসহ বিভিন্ন শহরে তাজিয়া মিছিল বের করেছে।