মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

গ্রামে ফিরতে চান ৯৩ ভাগ নারী

মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার জরিপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে জীবিকার সন্ধানে শহরে আসা হতদরিদ্র নারীদের ৯৩ ভাগই গ্রামে ফিরে যেতে চান। মূলত শহরাঞ্চলে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় তারা গ্রামে ফিরে যেতে আগ্রহী। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার এক জরিপে সম্প্রতি এই তথ্য উঠে আসে। ‘গ্রামীণ নারীরা শহরে কেমন আছেন’-এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে জরিপটি চালানো হয়। এর জন্য গ্রাম থেকে শহরে আসা হতদরিদ্র নারীদের নিয়ে দলীয় আলোচনার ফলাফল বিশ্লেষণ করে এই তথ্য মিলেছে।  জরিপের ফলাফল থেকে জানা যায়, দারিদ্র্যের কারণে তারা শহরে আসেন। গ্রামে তারা সরকারের সহায়তায় কাজ করতে আগ্রহী। তবে গ্রামের মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিলে তাদের বেশি সুদ দিতে হয়, এ জন্য তারা সরকারি ঋণের ব্যাপারে আগ্রহী। এ ছাড়া গ্রামে বর্ষা মৌসুমে কোনো কাজ থাকে না। এ সময় বন্যায় তাদের ঘরবাড়িতে পানি উঠে। অনেক পরিবার নদী ভাঙনের কবলে পড়ে। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের অভাব দেখা দেয়। তাই বছরের এই সময়টায় বেশির ভাগ নারী কাজের সন্ধানে শহরে আসেন। এর মধ্যে বরিশাল, ভোলা, কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা, বাগেরহাট, ময়মনসিংহ এলাকার নারীর সংখ্যা বেশি।

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার জনসংযোগ কর্মকর্তা ফাতেমা ইয়াসমিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এই জরিপ সম্পর্কে জানান যে, জরিপটি ঢাকা সিটি করপোরেশনের মিরপুরের কল্যাণপুর পোড়া বস্তি ও মোহাম্মদপুর রায়ের বাজার বস্তিতে চালানো হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত চালানো হয় জরিপ। ১০-১৫ জনের একটি গ্রুপ করে এই জরিপ চালানো হয়। সংস্থাটির প্রকল্প পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদের মতে, সংসারে অভাব, অতি মাত্রায় খরা, নদী ভাঙন, বন্য হাতির আক্রমণ, কাজের অভাব ইত্যাদি কারণে গ্রামের নারীরা শহরমুখী হচ্ছেন। এ ছাড়া গ্রামে কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকা এবং কেনাবেচার জন্য বাজার দূরে থাকায় শহরে আসছেন। কিন্তু শহরে আসার পর বস্তিতে বিদ্যুৎ, পানির অভাবে অস্বাস্থ্যকর মানবেতর জীবনযাপন করাসহ আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় তারা আবারও গ্রামে ফিরে যেতে আগ্রহী। প্রায় ৫০ হাজার নারীর ওপর পরিচালিত এই জরিপে শহরে আসার পিছনে মূল কারণ ছিল আর্থিক অনটন। তারা গ্রামে কর্মসংস্থানের জন্য সরকারের কাছে আবেদনও জানিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর