সিলেটে মাটির নিচ থেকে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) ক্যাবল চুরির মচ্ছব চলছে। কয়েক মাসে বিটিসিএলের প্রায় কোটি টাকার ক্যাবল চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসব ক্যাবল চুরির সঙ্গে খোদ বিটিসিএলের কর্মচারীরাই জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। ক্যাবল চুরির কারণে সিলেটে দুই সহস্রাধিক টেলিফোন বিকল রয়েছে। চুরির ঘটনায় মামলা এবং বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও কোনো কাজ হয়নি। কারা এসব ক্যাবল চুরির সঙ্গে জড়িত, তা খুঁজে বের করতে বিটিসিএল কিংবা পুলিশ কারওই আগ্রহ নেই। সংশ্লিষ্টদের এমন উদাসীনতায় সর্বশেষ গত শুক্রবার দিবাগত রাতেও নগরীর টিলাগড় এলাকা থেকে বিটিসিএলের ২০৪ মিটার ক্যাবল চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে ওই এলাকার চার শতাধিক টেলিফোন বিকল হয়ে পড়ে। বিটিসিএল সিলেট অফিস সূত্রে জানা যায়, গত মে থেকে জুলাই মাসের মধ্যে নগরীর প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজার থেকে চৌহাট্টা সরকারি মহিলা কলেজের সামনের ম্যানহোল পর্যন্ত ৩০০ মিটার দূরত্বে মাটির নিচ থেকে ১২০০ পেয়ার ক্যাবল দুবার চুরির ঘটনা ঘটে। পরে এ এলাকায় ৯০০ পেয়ারের ক্যাবল লাগায় বিটিসিএল। কিন্তু ওই ক্যাবলগুলোও চুরি হয়ে যায়। ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে মাটির নিচে থাকা ক্যাবল কেটে নেয় দুর্বৃত্তরা। একইভাবে জুলাই মাসের প্রথম দিকে পাঠানটুলা থেকে ক্যাবল চুরির ঘটনা ঘটে।
এসব ক্যাবল চুরির কারণে নগরীর কুমারপাড়া, আম্বরখানা, আখালিয়া, রিকাবিবাজার, মদিনা মার্কেট, হাওয়াপাড়া, ঝরনারপাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় দেড় সহস্রাধিক গ্রাহকের ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ক্যাবল চুরির প্রায় তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো তা পুনঃস্থাপন করে বিকল টেলিফোনগুলো সচল করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে একের পর এক ক্যাবল চুরির ঘটনা ঘটলেও এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের কোনো তৎপরতা নেই। কোটি টাকা মূল্যের এসব ক্যাবল চুরির পেছনে কারা জড়িত, তা খুঁজে বের করতে বিটিসিএল কিংবা পুলিশ, কারওই কোনো তৎপরতা নেই। অভিযোগ উঠেছে, বিটিসিএলের লোকজনই চুরির পেছনে থাকায় সংস্থাটি কোনো তৎপরতা দেখাচ্ছে না।বিটিসিএল সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত লোক ছাড়া মাটির নিচ থেকে এসব ক্যাবল কেটে নেওয়া অসম্ভব। এক্ষেত্রে বিটিসিএলের কর্মচারীদের দিকেই অভিযোগের আঙ্গুল উঠে। এ ব্যাপারে বিটিসিএল সিলেট অফিসের জেনারেল ম্যানেজার শামছুল আলম বলেন, ‘চুরির ঘটনায় একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করলেও সেই কমিটি কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি।’