রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

দলীয় রাজনীতির কারণে গণতন্ত্র অসহায় : মইনুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

দলীয় রাজনীতির কারণে গণতন্ত্র অসহায় : মইনুল

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেছেন, দলীয় রাজনীতির কারণে গণতন্ত্র অসহায় হয়ে গেছে। আইনের শাসনের লোকজন বিএনপি-আওয়ামী লীগের কীভাবে হয়? দলীয় হওয়ায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা মাথায় আসে না। দলীয়করণ করে বিচারকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সাংবাদিক-আইনজীবীদের দলীয় হলে হবে না। গণতন্ত্র রক্ষা না করা হলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, আইনের শাসন রক্ষা হয় না। একমাত্র গণতন্ত্রকে রক্ষা করে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের আট বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন আয়োজিত আলেচনা সভায় অংশ নিয়ে ব্যারিস্টার মইনুল এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন হিউম্যানিটি  ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বিচারপতি আমিরুল কবীর চৌধুরী, বার কাউন্সিলের সহ-সভাপতি আবদুল বাসেত মজুমদার, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন, সুপ্রিমকোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ইকতেদার আহমেদ, সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান এতে বক্তব্য রাখেন। ‘বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের আরও অনেক পথ বাকি’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক ও আইন-বিশ্লেষক মিজানুর রহমান খান। প্রবীণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার বলেন, ‘শুধু বিচার বিভাগ স্বাধীন হলেই হবে না, মানুষের সত্যিকারের বিচার পেতে হলে বিচারক ও আইনজীবী সবারই দায়িত্ব আছে। বিচার বিভাগ পৃথক হলেও দ্বৈত শাসনের গ্যাঁড়াকলে পড়ে অনেকে অনেক কথা বলেছেন। এর পরও আমি বলব বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। তবে এটা ঠিক, বিচার বিভাগের পৃথকীকরণে এখনো অনেক পথ বাকি।’

মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি আমিরুল কবীর চৌধুরী বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ নিয়ে বলেন, ‘আকাশে ঘুড়ি উড়িয়ে দিয়ে নাটাই হাতে রেখে দেব, তা হতে পারে না।’ সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, অন্যের ওপর নির্ভরশীল হলে ন্যায়বিচার নাও হতে পারে। তাই বিচারক স্বাধীন থাকুন, স্বাধীনভাবে কাজ করুন, জাতি এটাই চায়। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, বিচারকরা প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন কি না, তা দেখতে হবে। দ্বৈত শাসন জুডিশিয়ারিতে থাকতে পারে না। সব হায়ার জুডিশিয়ারি নির্বাহীদের হাতে। সংসদের হাতে অভিশংসন। সর্বোচ্চ আদালত সংসদের দিকে তাকিয়ে থাকলে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবেন না।

সুপ্রিমকোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ইকতেদার আহমেদ বলেন, অনেক মামলায় আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতে জামিন ও রিমান্ড হয়। প্রবন্ধে মিজানুর রহমান খান বলেন, দ্বৈত ব্যবস্থা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য প্রধান বাধা। মাসদার হোসেন মামলার মাধ্যমে অধস্তন আদালতে যে দ্বৈত শাসন বা ‘ডায়ারকি’ ব্যবস্থা মেনে নেওয়া হয়েছে, তা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে গুরুতরভাবে আঘাত করেছে।

বিচার বিভাগ পৃথক করা হলেও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং লোকবল সংকটসহ নির্বাহী বিভাগের ইচ্ছার ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে বলে দাবি করেন বক্তারা।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর