শিরোনাম
রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

হারুন : দুষ্ট দমনে দৃঢ়চিত্ত এক পুলিশ সুপারের নাম

গাজীপুর প্রতিনিধি

দুষ্টের দমন ও অনাচার প্রতিরোধে দৃঢ়চিত্ত গাজীপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ পিপিএম (বার) জেলাবাসীর প্রশংসা অর্জন করছেন। এর কারণ তিনি চাঁদাবাজ, ডাকাত, ছিনতাইকারী ও পোশাক শিল্পে নাশকতাকারীদের কঠোর হাতে দমন করে চলেছেন। জানা গেছে, দেড় বছর আগে ২০১৪ সালের ২৪ আগস্ট তিনি পুলিশ সুপার পদে যোগ দেন। যোগ দিয়েই ঘোষণা করলেন মাদকের বিরুদ্ধে জেহাদ। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সব শ্রেণি-পেশার লোকজনকে একত্র করে মাদকবিরোধী সমাবেশ ও র‌্যালি করে মাদক ব্যবসায়ী, মাদক ব্যবহারকারী ও জোগানদাতাদের সতর্কবার্তা পৌঁছে দেন। এর পর শুরু হয় সাঁড়াশি অভিযান। উদ্ধার করলেন হাজার হাজার লিটার মদ, ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা, হেরোইন এবং জড়িতদের একের পর এক গ্রেফতার করতে থাকেন। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। গত ২৭ ডিসেম্বর ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ মাঠে বিরোধী দলের রাজনৈতিক জনসভাকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিলে পুলিশের কঠোর পদক্ষেপ সেখানে শান্তি-শৃঙ্খলা বলবৎ করে। বিষয়টি উচ্চ প্রশংসিত হয়। এর কদিন পরই দেশে লাগাতার হরতাল-অবরোধের মধ্যে বিশ্ব ইজতেমা শুরু হয়। বিরোধী দলের হুমকির মুখে অনেক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে পুলিশ সুপারের বিরামহীন চেষ্টায় শান্তিপূর্ণ ও সফলভাবে দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমা সম্পন্ন হয়। জেলার বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রিসোর্ট ও বাসা-বাড়িতে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধের লক্ষ্যে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে কয়েকশ অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে রিসোর্ট ও আবাসিক হোটেলে পুলিশের নজরদারি বৃদ্ধি করা রয়েছে। জেলার ব্যবসায়ী সমাজের মতে, বর্তমান পুলিশ সুপার গাজীপুরে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন শিল্প, কল-কারখানা, গার্মেন্ট, ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ঝুট নিয়ে হাঙ্গামা কঠোরভাবে প্রতিহত করে অনাচারে জড়িত ব্যক্তি সরকারদলীয় সংগঠনের সদস্য হলেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। কালিয়াকৈরে কারখানার পরিত্যক্ত মালামাল দখলের ঘটনায় গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতিকেও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়। গাজীপুর সিটি করপোরেশনে হাঙ্গামা ও ভাঙচুরের কারণে সরকারদলীয় লোকদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ঝুট ব্যবসার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সৃষ্ট ঘটনায় কাউকে ছাড় না দেওয়ায় জেলায় পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। এলাকার সাধারণ মানুষের মতে, গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপারের উদ্যোগে জেলার বিভিন্ন স্থানে ‘পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ’ স্লোগানে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা চালু করায় অপরাধের মাত্রা কমে এসেছে। হারুন অর রশীদ ঢাকার লালবাগ জোনের উপ-কমিশনার থাকাকালে ২০১৩ সালের ৫ মে-তে হেফাজতে ইসলামের হিংসাÍক আন্দোলন হয়েছিল। সে সময় তিনি তার কর্তৃপক্ষীয় নির্দেশে হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফীকে বিমানযোগে চট্টগ্রামে পৌঁছে দেন এবং মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীকে আটক করেন। কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান গাজীপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি জানান, ‘স্বাধীনতার স্বপক্ষে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের একজন সন্তান হয়ে দেশ ও দেশের জনগণের কাছে তার একটি দায়বদ্ধতা রয়েছে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি রাষ্ট্র, সমাজ ও দেশের মানুষের কল্যাণকর সব কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তিনি বলেন, দেশ, সমাজ ও জনগণের জন্য যারাই হুমকি হয়ে দাঁড়াবে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে ইনশাল্লাহ।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর