শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

জেএমবির নাশকতা ঝুঁকিতে রংপুরের আট জেলা

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি রংপুর বিভাগের আট জেলায় আরও হত্যাকাণ্ড ও নাশকতা চালাতে পারে এমন আশঙ্কায় তৎপর হয়ে উঠেছে পুলিশ। সংগঠনটির সংঘবদ্ধ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্যরা অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক ব্যবহার করে যে কোনো সময় বড় ধরনের নাশকতা ঘটাতে পারে। এর মধ্যে রংপুর ও দিনাজপুরকে ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ জেলা হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। দুই মাস সাত দিনের ব্যবধানে এক বিদেশি নাগরিকসহ দুজনকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা, এক বিদেশি চিকিৎসক ও বাহাই সম্প্রদায়ের এক নেতাকে গুলি করে এবং শিয়া মসজিদের এক খাদেমকে নামাজরত অবস্থায় কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। বোমা হামলার ঘটনা ঘটে দুটি মন্দিরে। ১১ জন পাদ্রিকে চিঠি দিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত যে ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা সবাই জেএমবির সদস্য। তারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত

থাকার পাশাপাশি বাইরে থাকা জেএমবির সদস্যরা আরও নাশকতা চালানোর তথ্য দিয়েছে পুলিশকে। এ তথ্য পুলিশকে ভাবিয়ে তুলেছে। ডিআইজি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এসব ঘটনায় পুলিশ রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা থেকে জেএমবির ১৮ সদস্যকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে সংগঠনটির আঞ্চলিক কমাণ্ডার ও ইউনিট কমাণ্ডারও রয়েছে। তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি এসএমজি ও একটি একে-৪৭ রাইফেল, ৪৭ রাউণ্ড গুলি, গ্রেনেড তৈরির ৫০টি লোহার কৌটা ও তিনটি ছোরা উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ড ও নাশকতার কাজে ব্যবহূত তিনটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার জেএমবির রংপুর অঞ্চলের কমাণ্ডার মাসুদ রানা, ইউনিট কমাণ্ডার খয়বর হোসেন, ইরাক থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া এহসার সদস্য ও অস্ত্র সংরক্ষণকারী ইসাহাক আলীকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তারা এসব ঘটনার সঙ্গে জেএমবি জড়িত বলে স্বীকার করেন। তাদের সদস্যরা আরও নাশকতা ও হত্যার ঘটনা ঘটাবে বলেও জবানবন্দিতে জানান মাসুদ রানা ও ইসাহাক।

জানতে চাইলে পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হুমায়ুন কবীর বলেন, সম্প্রতি রংপুর বিভাগের আট জেলায় হত্যা ও নাশকতার ঘটনায় গ্রেফতার ১৮ জনই জেএমবি সদস্য। এদের মধ্যে আঞ্চলিক কমাণ্ডার, ইউনিট কমাণ্ডার এবং ইরাক থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এক অস্ত্র সংরক্ষণকারী আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এসব ঘটনার সঙ্গে জেএমবি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এছাড়া তাদের কাছ থেকে নাশকতার যে ছক পাওয়া গেছে তাতে করে হত্যা ও নাশকতার ঝুঁকিতে রয়েছে আট জেলা। এরমধ্যে রংপুর ও দিনাজপুরকে ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে ভাবা হচ্ছে। তবে জেএমবির নাশকতা ঠেকাতে প্রতিটি জেলায় কড়া নজরদারির পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা তৎপর রয়েছে। আট জেলাতেই জেএমবি পাকড়াও অভিযান চালানো হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর