শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

পদোন্নতির দরজা খুলছে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের

নিজামুল হক বিপুল

পদোন্নতির দরজা খুলছে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের

অবশেষে প্রশাসনের বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতির দরজা খুলছে। বঞ্চিতদের আশা— যোগ্যতা, দক্ষতা এবং সততাকে মূল্যায়ন করে আগামী মার্চের মধ্যেই তাদের পদোন্নতির বিষয়টি সুরাহা হবে। বঞ্চিতদের পদোন্নতির বিষয়ে ইতিমধ্যে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) চার দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, গত ১২ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর মূল কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দেন বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তাদের পদোন্নতির বিষয়টি দ্রুত নিশ্চিত করার। প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশনার পর গত ১৪, ১৭, ১৮ ও ২১ ডিসেম্বর চার দফা এসএসবি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসব বৈঠকে পদোন্নতি বঞ্চিতদের বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে সরাসরি তদারকি করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব নিজে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বঞ্চিত কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে তারা রিভিউর দাবি জানিয়ে এলেও জনপ্রশাসনের এপিডি উইং-এর কতিপয় কর্মকর্তার অনীহার কারণে তাদের দাবি নিয়ে তেমন আলোচনা হচ্ছিল না। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের হস্তক্ষেপে অবশেষে গত সপ্তাহে চার দফা এসএসবি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এখন তারা আশার আলো দেখছেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রায় সাত মাস আগে প্রশাসনে সর্বশেষ পদোন্নতি দেওয়া হয়। চলতি বছরের ৬ এপ্রিল দেওয়া ওই পদোন্নতিতে উপ-সচিব, যুগ্ম-সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদে মোট ৮৭৩ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। প্রশাসনের উপরের দিকে পদের সংখ্যা কম হলেও পদোন্নতি দেওয়া হয় ব্যাপক হারে। তারপরও ওই পদোন্নতির সময়ে বাদ পড়েন তিন স্তরে আরও ৮০০ কর্মকর্তা। যাদের মধ্যে যোগ্যতা, দক্ষতা ও সততার বিচারে অনেকেই এগিয়ে ছিলেন। বঞ্চিত এসব যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তারা ৬ এপ্রিলের পদোন্নতির পর পরই অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা পুনরায় রিভিউয়ের আবেদন জানান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে। বঞ্চিতদের পক্ষ থেকে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত অবহিত করা হয়। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী মে মাসে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের একটি অনুষ্ঠানে বঞ্চিতদের মধ্যে যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তাদের বিষয়টি দ্রুত বিবেচনা করে তাদের পদোন্নতি দেওয়ার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ওই নির্দেশনার পর গত সাত মাসেও এ নিয়ে কোনো রকম তত্পরতা দেখা যায়নি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের। বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরও শুধু এপিডি উইংয়ের অনাগ্রহের কারণে রিভিউর বিষয়টি এতদিন ধরে ঝুলে আছে। জানা গেছে, মে মাসে প্রথম নির্দেশনার পরও প্রধানমন্ত্রী আরও দুই দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি। এসব বিষয় প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে বার বার অবহিত করা হয় বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে। গত ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুর মূল কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে সর্বশেষ আরেক দফা নির্দেশনা দেন পদোন্নতির বিষয়ে। বঞ্চিত কর্মকর্তারা জানান, তারা আশায় বুক বেঁধে আছেন। তাদের আশা আগামী বছরের মার্চের মধ্যেই পদোন্নতির বিষয়টি ফয়সালা হবে।  একজন কর্মকর্তা জানান, বঞ্চিতদের মধ্য থেকে উপ-সচিব, যুগ্ম-সচিব ও অতিরিক্ত সচিব পদে তিন দফায় পদোন্নতি দেওয়া হবে।  সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বঞ্চিত এসব কর্মকর্তার মধ্য থেকে যেসব কর্মকর্তা সৎ, যোগ্য, দক্ষ এবং যাদের চাকরি জীবনে কোনো (এসিআর) ধরনের দাগ নেই তাদের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে একটি তালিকা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি কিংবা মার্চ মাসের দিকে তিন স্তরে তাদের পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়েও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর