শনিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

শব্দে শব্দে গড়ে তুলি অলৌকিক প্রাসাদ

কামাল চৌধুরীর গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠান

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

শব্দে শব্দে গড়ে তুলি অলৌকিক প্রাসাদ

কবি কামাল চৌধুরীর ছয়টি গ্রন্থের প্রকাশনা উপলক্ষে গতকাল ‘শব্দে শব্দে গড়ে তুলি অলৌকিক নদী ও প্রাসাদ’ শীর্ষক কাব্যপাঠ, প্রকাশনা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হয়েছে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, কামাল চৌধুরী হচ্ছেন সাহিত্যের ডাক্তার। বানান, উচ্চারণ ও শব্দসংক্রান্ত কোনো জটিলতা ও ভুল চোখে পড়লে তা আমরা কামাল চৌধুরীকে দিয়ে সংশোধন করি। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। আলোচনায় অন্যদের মধ্যে অংশ নেন নজরুল গবেষক ড. রফিকুল ইসলাম, কবি রুবী রহমান, কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী ও কথাশিল্পী ইমদাদুল হক মিলন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জাতীয় জাদুঘর ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, কবি নাসির আহমেদ, কবি মোহাম্মদ সাদিক, কবি আসাদ মান্নান, প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম, কবি বুলবুল মহলানবিশ, ছড়াকার আলম তালুকদার, আলমগীর হোসেন, কাবেদুল ইসলাম, কবি শামীম রেজা, কবি শামীমুল হক শামীম প্রমুখ।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, কামাল চৌধুরী কবিতায় দেশ ও মানুষের কথা বলেছেন। তার নতুন কবিতার বইয়ে আমরা আবারও দেশপ্রেম ও মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রকাশ দেখতে পাচ্ছি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে কবিতাচর্চার অনন্যতার পাশাপাশি দেশের প্রগতিশীল উত্থানের পথে কামাল চৌধুরী দৃপ্ত ভূমিকা পালন করেছেন। এ সময় তিনি কামাল চৌধুরীর দুটি কবিতা আবৃত্তি করেন।

কালের কণ্ঠ সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, কামাল চৌধুরীকে বন্ধু হিসেবে পেয়ে আমি গর্বিত।

নজরুল গবেষক অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, ত্রিশের দশকে আমাদের দেশের কবিতা পড়ে গর্বিত হতাম। পরবর্তীতে পঞ্চাশের দশকে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে এ দেশের কবিরা আমাদের চেতনাকে দারুণভাবে নাড়া দেন। বাংলাদেশ হওয়ার আগেই বাংলাদেশের সাহিত্য গড়ে ওঠে। জীবনে কোনো কবিতা লিখিনি কিন্তু পড়েছি অনেক। কামাল যখন আমার ছাত্র তখনই তার কবিতা আমার চোখে পড়ে। কবি কামাল চৌধুরীকে মানুষ চিনবে তার কবিতার মাধ্যমে।

কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ও কামাল চৌধুরী একই বৃন্তে দুটি ফুল। তার প্রথম প্রকাশক আমি। আমার ‘দ্রাবিড়’ থেকেই তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করি। বাংলাদেশে কোনো কবি ‘কবি’ হয়ে ওঠার আগ পর্যন্ত প্রকাশকরা সেই কবির বই প্রকাশ করতে চান না। কিন্তু কামাল চৌধুরী তার মেধা ও মননের জোরেই বাংলা একাডেমির প্রকাশনা থেকে নিজের বইটি প্রকাশ করতে পেরেছেন।

সভাপতির বক্তব্যে শামসুজ্জামান খান বলেন, কামাল চৌধুরীর কবিতা-নির্মাণকলায় বোধ ও ভাষা নির্মিতির যে নতুনতা আমরা লক্ষ্য করি তা প্রমাণ করে কবিতায় তিনি নিরন্তর নিরীক্ষাপ্রবণ। তার নতুন প্রকাশিত কবিতার বই এবং কবিতার মূল্যায়নগ্রন্থ কবিতাপ্রেমী ও বোদ্ধাদের কাছে নিঃসন্দেহে আদৃত হবে।

এর আগে কবি কামাল চৌধুরীর লেখা গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর উত্তরীয় পরিয়ে অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের বরণ করে নেওয়া হয়। এ সময় আবৃত্তি করেন শাহাদাৎ হোসেন নিপু। বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন কবিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর