বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

গণতন্ত্র ও গণমাধ্যম একে-অপরের পরিপূরক : রাষ্ট্রপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে গণমাধ্যমকে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও গণমাধ্যম একে অপরের পরিপূরক। গণতন্ত্র বিকশিত হলেই গণমাধ্যমের প্রসার ঘটে। তাই মনে রাখতে হবে, একটি সংবাদ বা রিপোর্টের কারণে যেন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও জাতি হয়রানির শিকার না হয়। সংবাদ প্রচার ও প্রকাশের ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান ও বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাফর ওয়াজেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ। সভাপতিত্ব করেন ডিইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আতিকুর রহমান চৌধুরী। ওসমানি মিলনায়তনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি ডিজিটাল স্ক্রিনের মাধ্যমে জাতীয় প্রেসক্লাবে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুলের সভাপতিত্বে দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় পরিবেশিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

রাষ্ট্রপতি এ সময় সরকারঘোষিত অষ্টম পে-স্কেলের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে সাংবাদিকদের বেতনবৈষম্য দূর করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সম্প্রতি সরকারঘোষিত অষ্টম পে-স্কেলের ফলে সাংবাদিকরা বৈষম্যবোধ করছেন। আমি আশা করি, সরকার এ ব্যাপারে যথাযথ মনোযোগ দেবে। সমস্যাটির অচিরেই সমাধান করবে। সরকার সবসময় সাংবাদিকদের উন্নয়নের সঙ্গে থাকবে। তিনি বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। এর মাধ্যমে জনগণ আশা, আকাঙ্ক্ষা ও অভিপ্রায় ব্যক্ত করে থাকে। রাষ্ট্রের অভিভাবকরা যা ভুলে যায় কিংবা পর্যাপ্তভাবে দৃষ্টি স্থাপন করেন না, সেটা বলার দায়িত্ব গণমাধ্যম পূরণ করে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, আবার অনেক সময় গণমাধ্যমকর্মীরা এ জন্য বিরাগভাজনও হয়ে থাকেন। যার জন্য জাতি ও গণতন্ত্র অপূর্ণ থাকে। প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গণমাধ্যমের ভূমিকা প্রশংসনীয়। তবে কিছু লোকের ভূমিকার কারণে গণমাধ্যমের সুনাম যাতে ক্ষুণ্ন না হয় সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, আজকের যুগে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রযুক্তিকে জনগণের কল্যাণে দায়িত্বের সঙ্গে ব্যবহার করা। এ ব্যাপারে গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতির বিবেক হিসেবে সাংবাদিকরা যদি ঘটনাগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরতে পারেন তাহলে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে। আমি আশাবাদী সাংবাদিকরা সে দায়িত্বটি ভালোভাবে পালন করবেন।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সংবাদ পরিবেশনে বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সাংবাদিকদেরকে তাদের নৈতিকতাবোধ হিসেবে অবশ্যই দেশ, মানবতা, আইন ও স্বাধীনতার প্রতি জবাবদিহিতা বজায় রাখতে হবে। তথ্যমন্ত্রী তথ্য অধিকার আইন কার্যকর করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এই আইন তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করেছে। সাংবাদিকরা সরকারি অফিসকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহি করতে ভূমিকা রাখতে পারে।

সর্বশেষ খবর