বুধবার, ২ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে পুকুর খননের হিড়িক, কমছে ফসলি জমি

স্থানীয়রা বাধা দিলেও নীরব ভূমি অফিস

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

রাজশাহীর পবা উপজেলার দর্শনপাড়ার বিলধরমপুর মাঠ। পাশের গ্রামের কায়সার রহমান এই মাঠে বছরে গম, আলু, পিয়াজসহ তিন ফসলের চাষ দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘বছরে একই জমিতে তিনটি ফসল সব মাটিতে হয় না। কিন্তু এ অঞ্চলের মাঠে তিনটি ফসল পাওয়া যায়। সেই ফসলের মাঠ ধ্বংস করে এখন সবাই পুকুর খননে ব্যস্ত।’ ওই গ্রামের মেহেরজান বিবি (৬২) জানান, দিগন্তজোড়া খেত কমে আসছে। ফসলি জমি কেটে মাঠের মাঝে তৈরি হচ্ছে পুকুর। এ কারণে কমে যাচ্ছে ফসলের জমি। শুধু দর্শনপাড়া নয়, পবা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছে পুকুর খননের মচ্ছব। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, গত দুই বছরে চার হাজার বিঘা ফসলি জমি কেটে পুকুর খনন করা হয়েছে। প্রতি বছর গড়ে দুই হাজার বিঘা ফসলি জমি কমছে শুধু পুকুর খননের কারণে। গত দুই বছরে এই উপজেলায় ৩২০টি পুকুর খনন করা হয়েছে। সর্বনিম্ন ২০ বিঘা থেকে সর্বোচ্চ ১০০ বিঘা জমিতে তৈরি করা হয়েছে পুকুর। রাজশাহীর পবা উপজেলা খাদ্যে উদ্বৃত্ত হিসেবে পরিচিত। এখন এই উপজেলায় কৃষিজমি নষ্ট করে পুকুর খনন করছে একটি চক্র। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে পুকুর খনন। কিছুদিন আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও এখন আবার শুরু হয়েছে। অভিযোগ আছে, অদৃশ্য কারণে পুকুর খনন বন্ধ হচ্ছে না।

জানা যায়, দর্শনপাড়ার বিলধরমপুর মাঠে নগরীর সাইবার ক্যাবলের স্বত্বাধিকারী পুকুর খনন করছেন। ওই প্রতিষ্ঠানের কেয়ারটেকার হারুন জানান, এগুলো পুকুর হচ্ছে না। তারা মাছ চাষের ঘের তৈরি করছেন। যা চিংড়ি মাছ চাষ এলাকায় হয়ে থাকে। পুকুর হলে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ ফুট খনন করতে হয়। কিন্তু তারা ৪ থেকে ৫ ফুট খনন করছেন।   পবার পালিরা ইউনিয়নের ভবানীপুর   মৌজার ৭৬১ নম্বর দাগে ৭১ দশমিক ২১ একর এবং ঘোলহাড়িয়া মৌজার ৭৫৩ ও ৮৯৫ দাগে ৬৮ দশমিক ২১ একর   সরকারি খাসজমি হলেও এসব দাগের বিভিন্ন স্থানে পুকুর খনন করা হয়েছে।

স্থানীয়রা বাধা দিলেও  উপজেলা  ভূমি অফিস খননে কোনো বাধা দেয়নি। উপজেলার বড়গাছী ও হুজরিপাড়া ইউনিয়নে গত এক বছরে শতাধিক পুকুর খনন করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর