রবিবার, ৬ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

গুলশানে গারো নারী খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেও অজ্ঞাত এক গারো নারী নৃশংসভাবে খুন হয়েছে। তার আনুমানিক বয়স ২৮ বছর। গতকাল সকালে গুলশান-১ এর ১২ নম্বর সড়কের ১১ নম্বর বাড়ির দেয়াল ঘেঁষে পড়ে থাকা তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই নারীর শরীরে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশের ধারণা, ওই নারীকে অন্য কোথাও খুন করে ঘটনাস্থলে ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। ১১ নম্বর বাড়ির দারোয়ান মতিয়ার রহমান জানান, শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে তিনি এক নারীর লাশ রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখেন। ওই সময়ে তিন যুবককে তিনি দেখতে পেয়েছেন। এদের মধ্যে দুজন ১২ নম্বর রোড ধরে এবং একজন ১৩ নম্বর রোড ধরে দ্রুত হেঁটে চলে যায়। তবে কোনো গাড়ি দেখতে পাননি। পরে বিষয়টি তিনি সবাইকে অবহিত করেন। ৯ নম্বর বাড়ির দারোয়ান মোফাককের হোসেন বলেন, শুক্রবার রাত পৌনে ১১টার দিকে তিনি ডিউটি করতে আসেন। ওই সময়ে কোনো গাড়ি বা লোক দেখতে পাননি। দেখতে পাননি কারও লাশ। সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। আশপাশে পুলিশের বেষ্টনী। ওই নারীর লাশ ১১ নম্বর ভবনের দেয়ালের দিকে মাথা ও রাস্তার দিকে হাত-পা ছড়িয়ে ছিল। গুলশান থানার এসআই হুমায়ুন রশীদ সেখানে হত্যাকাণ্ডের আলামত সংগ্রহ ও স্থানীয়দের সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। সকালে সিআইডির একটি দল ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। রাতে ঘটনা জানার পর থেকে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ভিড় করেন। তারা এ ঘটনায় রীতিমতো হতবাক হয়েছেন। স্থানীয়রা বলছে, কঠোর নিরাপত্তার বেষ্টনী ভেঙে দুর্বৃত্তরা কীভাবে ওই নারীকে হত্যা করল। তারা বলেন, ২৮ সেপ্টেম্বর ইতালিয়ান নাগরিক তাভেলা সিজার হত্যাকাণ্ডের পর থেকে গোটা গুলশানে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। রাতে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি টহল দিয়ে থাকে। তারপরও এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড জনমনে আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছে।

পুলিশের গুলশান বিভাগের এডিসি আবদুল আহাদ জানান, সকালে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই নারী গারো সম্প্রদায়ের বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্য কোথাও হত্যা করে তাকে গাড়িতে করে ঘটনাস্থলে ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। তার গলায়, পেটে, হাতে ও পায়ে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। নিহতের পরনে ছিল গোলাপী রঙের কামিজ ও ওড়না এবং কালো টাউজার। নিহতের পরিচয় জানতে পারলে মৃত্যুর রহস্য উন্মোচিত হবে।

ঢামেক সূত্রে জানা গেছে, ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে কিনা এবং গর্ভবতী ছিল কিনা তা পরীক্ষা করতে পুলিশের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের অনুরোধ করা হয়েছে। পরিচয় না পাওয়ায় ওই নারীর ডিএনএ টেস্টও করা হতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর