বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

বাংলাদেশকে ভারত দিচ্ছে আরও ২০০ কোটি ডলার

চুক্তি স্বাক্ষর আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশকে আরও ২০০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে ভারত, স্থানীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা। বিদ্যুৎ, রেল ও নৌপথের অবকাঠামো এবং তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়নে নেওয়া ১৩টি প্রকল্পে ঋণের এ অর্থ ব্যবহার করা হবে। আজ বেলা ৩টায় এ-সংক্রান্ত একটি চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে ভারতের সঙ্গে। রাজধানীর শেরেবাংলানগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকের মধ্যে এই ঋণচুক্তি স্বাক্ষর হবে বলে জানা গেছে। ইআরডি জানায়, ২০১৫ সালের ৬ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময় বাংলাদেশকে নতুন করে ২০০ কোটি ডলারের ‘নমনীয় ঋণ’ দিতে সমঝোতা চুক্তি হয়। সেই ঋণ পেতেই চুক্তি হবে আজ। ভারতের এই ঋণ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন ২০০ কোটি ডলারের ঋণের সব শর্তই ২০১০ সালে চুক্তি হওয়া প্রথম ১০০ কোটি ডলারের ঋণের মতো হবে। এ জন্য মাত্র ১ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। কমিটমেন্ট ফি দিতে হবে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ হারে। আর পাঁচ বছরের রেয়াতকালসহ ২০ বছরে পরিশোধ করতে হবে এ ঋণ। তবে নির্ধারিত সময়ে অর্থব্যয় নিশ্চিত করতে না পারলে ২ শতাংশ হারে সুদের অতিরিক্ত দণ্ড সুদ দিতে হবে। শর্ত হিসেবে চলমান ঋণের মতো নতুন প্রকল্পগুলোর অন্তত ৬৫ থেকে ৭৫ শতাংশ পণ্য ও সেবা অবশ্যই ভারত থেকে আনতে হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ঋণের টাকায় যেসব প্রকল্প হবে : নতুন ২০০ কোটি ডলার ঋণের অর্থে বাস্তবায়নের জন্য সরকার ১৩টি উন্নয়ন প্রকল্প বাছাই করেছে। এর মধ্যে রেলের তিন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯ কোটি ডলার। এতে আছে রেলপথের খুলনা-দর্শনা সেকশনকে ডাবল লাইনে উন্নীতকরণ প্রকল্প। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৮ কোটি ডলার। রেলের দ্বিতীয় প্রকল্প হচ্ছে, পার্বতীপুর-কাউনিয়া রেললাইনকে ডুয়েল গেজে উন্নীতকরণ। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ কোটি ডলার। রেলের তৃতীয় প্রকল্প সৈয়দপুর রেলস্টেশনের ওয়ার্কশপ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৫০ লাখ ডলার। বিআরটিসির জন্য ৫০০টি ট্রাক সংগ্রহ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৮১ লাখ ডলার। এ ছাড়া ৫ কোটি ৮৪ লাখ ডলার দিয়ে কেনা হবে বিআরটিসির জন্য দ্বিতল বাস। এ খাতে যন্ত্রপাতি আমদানি প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ কোটি ৯১ লাখ ডলার। স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে ভারতীয় ঋণে চারটি মেডিকেল কলেজ ও একটি জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২ কোটি ডলার। এ ছাড়া ১২ জেলায় হাইটেক আইটি পার্ক নির্মাণ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ কোটি ১০ লাখ ডলার। নৌপরিবহন খাতে আশুগঞ্জ নদীবন্দরের আধুনিকায়ন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭ কোটি ৪২ লাখ ডলার। এ খাতের আরেকটি প্রকল্প হচ্ছে আশুগঞ্জ বন্দরের অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ডিপো উন্নয়ন প্রকল্প। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৯১ লাখ ডলার। ভারতের নতুন ঋণের অর্থে ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং দুটি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট উন্নয়ন করার কথাও রয়েছে। এ জন্য ৩৫ কোটি ১৩ লাখ ডলার ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষে বছরে আরও এক লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে।

সর্বশেষ খবর