শনিবার, ১২ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

সেই ক্যাডাররা এখনো অধরা

উদ্ধার হয়নি আগ্নেয়াস্ত্র

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে তুচ্ছ ঘটনায় চলছে আগ্নেয়াস্ত্রের মহড়া। কয়েক বছরে সিলেট নগরীতে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের ক্যাডারদের প্রকাশ্যে বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে অসংখ্যবার। বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে অনেকে পঙ্গুত্ববরণও করেছেন। অস্ত্রবাজির ঘটনার পর কয়েক দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তত্পর থাকলেও পরে ঝিমিয়ে পড়েন। ফলে অস্ত্রধারীরা থেকে যায় নিরাপদে। সংঘর্ষে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার ও অস্ত্রধারীরা ধরা না পড়ায় সিলেটে দিন দিন আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন নগরবাসী। সিলেটে সর্বশেষ আগ্নেয়াস্ত্রের মহড়া হয় ৭ মার্চ এমসি কলেজে। ওইদিন ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এম. রায়হান চৌধুরী ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিরণ মাহমুদ নিপু গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলিবিনিময় হয়। সংঘর্ষকালে ফটোসাংবাদিকদের ক্যামেরায় অস্ত্রধারী এক যুবকের ছবিও ধরা পড়ে। গত পাঁচ দিনেও অস্ত্রধারী ওই যুবককে গ্রেফতার বা আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি তার পরিচয়ও শনাক্ত হয়নি। এর আগেও নগরীর টিলাগড়, মেজরটিলা, বালুচর, মদিনা মার্কেট ও উপশহর এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার হয়। গত বছর পয়লা বৈশাখে এমসি কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও গোলাগুলি করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ। তবে ওই ঘটনায় অস্ত্রধারী কাউকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ২০১৩ সালের ১৯ মে এমসি কলেজে ছাত্রলীগের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বন্দুকযুদ্ধ হয়। ওই সময় হেলমেট পরা এক যুবককে অস্ত্রহাতে প্রকাশ্যে গুলি করতে দেখা যায়। হেলমেটে ঢাকা ওই যুবকের মুখ দেখা না গেলেও অস্ত্রধারী যুবক যুবলীগ নেতা হান্নান বলে দাবি করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ওই সময় শাহপরাণ থানায় অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলার আসামিও হন হান্নান। কিন্তু তিনি এখনো থেকে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। সিলেটে ভয়াবহ রাজনৈতিক     সংঘর্ষের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ২০১১ সালের ৬ মে সিলেট নগরীতে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘটিত সংঘর্ষ। বিএনপির পক্ষে ওই সংঘর্ষে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে গোলাগুলি করে ছাত্রদল ক্যাডাররা। ওইদিন এক ছাত্রদল কর্মী নিহতও হন। গণমাধ্যমে চার অস্ত্রধারীর ছবি ছাপা হলেও গত পাঁচ বছরে তাদের ছায়াও ছুঁতে পারেনি পুলিশ। উদ্ধার হয়নি একটিও অস্ত্র। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার বর্তমান অবস্থা কী, তাও জানা নেই পুলিশের।

এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. রহমত উল্লাহ জানান, পুলিশের কাজের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার। যখনই নগরীতে অস্ত্রবাজির কোনো ঘটনা ঘটে তখন পুলিশ অস্ত্র উদ্ধার ও অস্ত্রবাজদের গ্রেফতারে অভিযান চালায়। কিন্তু ঘটনার পরপরই অস্ত্রধারীরা আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয় না।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর