শিরোনাম
শনিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

নীতিমালা লঙ্ঘন করে স্কুলে কোচিং বাণিজ্য

ক্লাসে পড়ানোর গরজ নেই

আকতারুজ্জামান

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা লঙ্ঘন করে রাজধানীসহ সারা দেশে বিভিন্ন স্কুলে চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। ২০১২ সালে এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হলেও তদারকির অভাবে তা কাজে আসছে না। শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের জিম্মি করে কোচিং করতে বাধ্য করে হাতিয়ে নিচ্ছেন টাকা। কেউ কোচিং করতে অপারগতা প্রকাশ করলে কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়পত্র দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষাবিদরা বলছেন, এটি মেনে নেওয়া যায় না। এর বিরুদ্ধে সবার অবস্থান নেওয়া জরুরি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  অধ্যাপক  ড. সৈয়দ মন্জুরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কোচিং বাণিজ্যের রূপ নিয়েছে। বাড়তি অর্থের লোভে অনেক প্রতিষ্ঠান এখন একে জমজমাট ব্যবসা হিসেবে নিয়েছে। এটি শিক্ষকদের লোভে পরিণত হয়েছে। তাই ক্লাসে না পড়িয়ে কোচিংয়ে পড়াচ্ছেন। তিনি বলেন, কোচিং বন্ধে প্রশাসনের সদিচ্ছা রয়েছে বলেও মনে হয় না।

নীতিমালা অনুযায়ী কোচিংয়ে আদায় করা টাকার ১০ শতাংশ আলাদা তহবিলে জমার বিধান থাকলেও শিক্ষকরাই এ টাকা আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ। কোচিংয়ে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের কাছে প্রতি বিষয়ের জন্য মেট্রোপলিটন শহরে মাসিক সর্বোচ্চ ৩০০ ও জেলা শহরে ২০০ টাকা আদায় করা যাবে। কিন্তু বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই শিক্ষার্থীদের আগ্রহ নয়, বরং তাদের ওপর কোচিং চাপিয়ে দিয়েছে। সৈয়দ মন্জুরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, আইন করে কোচিং নিষিদ্ধ করতে হবে। কোচিংয়ে সৃজনশীল নয়, মুখস্থ বিদ্যা শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

রাজধানীর শান্তিবাগ উচ্চবিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষকরা কোচিং করতে বাধ্য করছেন। এসএসসি পরীক্ষার প্রায় ১১ মাস দেরি থাকলেও এ পরীক্ষা পুঁজি করে কোচিং চালু করা হয়েছে। প্রতি মাসে আদায় করা হচ্ছে ৭৫০ টাকা। আরও অভিযোগ, কেউ কোচিং করতে আগ্রহ না দেখালে তাকে ছাড়পত্র দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক এস এম মাইনুদ্দিন প্রিন্স। তবে এই শিক্ষক অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘অভিভাবকদের আবেদনের ভিত্তিতেই কোচিং চালু করা হয়েছে। এর জন্য নামমাত্র ৪০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।’ মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নজরুল ইসলাম রনি অভিযোগ করেন, ‘অষ্টম শ্রেণির জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষার জন্য কোচিং বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে কোচিংয়ের বদলে এর নাম দেওয়া হয়েছে বিশেষ ক্লাস। এর জন্য শিক্ষার্থীপ্রতি আদায় করা হচ্ছে ৬০০ টাকা।’ মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রের অভিভাবক জানান, পঞ্চম শ্রেণিতে ‘প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী’কে পুঁজি করে এ মাসেই চালু করা হয়েছে কোচিং। প্রতি মাসে দাবি করা হয়েছে ১২০০ টাকা করে। অভিভাবকরা এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কয়েক দিন ধরে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী পাঠাননি।

সর্বশেষ খবর