চট্টগ্রাম বন্দরের ১২৯ বছর পূর্তি আজ। এ উপলক্ষে বন্দর কর্তৃপক্ষ আয়োজন করেছে নানা কর্মসূচির। দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র ও প্রধান রাজস্ব জোগান দাতা চট্টগ্রাম বন্দর আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। তারপরও অবহেলিত রয়েছে এই বন্দর। চট্টগ্রাম বন্দরের বেহাত হওয়া সম্পদ ভ্রাম্যমাণ আদালতে উদ্ধার হলেও তা সংরক্ষণ হয় না। ফলে উদ্ধারের পর সেই সম্পদ ফের বেদখল হয়ে যায়। বন্দর হারায় কোটি টাকার রাজস্ব।
জানা যায়, ১৭৫৭ সালে পলাশী যুদ্ধের পর ব্রিটিশ ভারতবর্ষের বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। পরবর্তীতে ১৮৮৮ সালে ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দরের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। বন্দর সূত্রে জানা যায়, বন্দরের বিপুল পরিমাণ সম্পদ বেহাত ও বেদখল হয়ে যায়। কিন্তু ২০০১ সালে মুনীর চৌধুরী বন্দরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর উদ্ধার হয় বিশাল সম্পদ। ওই সময় তার নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে নিউমুরিং এলাকায় প্রভাবশালী ডক শ্রমিক নেতা সিরাজের দখল থেকে ১০০ কোটি টাকা মূল্যের ২২ একর জমি, ৩ নম্বর জেটি এলাকা থেকে প্রভাবশালী ডক শ্রমিক নেতা জাহাঙ্গীর আলমের দখল থেকে উদ্ধার করা হয় ৪৫ কাঠা জমি, বারিক বিল্ডিং মোড়ে ভেঙে ফেলা হয় চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের দখল করা স্টার বিল্ডিং ও কবির সুপার মার্কেট, হালিশহরের বাংলাদেশ রেলওয়ের দখল থেকে উদ্ধার করা হয় প্রায় ১০০ কোটি টাকার ২২ একর জমি, পতেঙ্গা মোহনার কাছে লালদিয়ার চরে উদ্ধার করা হয় ২২ একর জমি। তা ছাড়া কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ে অবৈধ ডকইয়ার্ড, ঘাট, জেটি, মার্কেট ইত্যাদি উচ্ছেদ করা হয়। এ সময় বন্দরের তহবিলে জমা হয় ২০০০ কোটি টাকার ভূমি ও অর্থসম্পদ। অভিযানে বন্দরের ২৬ কিলোমিটার জলসীমা জুড়ে দেশি-বিদেশি জাহাজের বেপরোয়া দূষণও কমিয়ে আনা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বন্দরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে আবুল হাশেম দায়িত্বে আসার পর উদ্ধার হয় বন্দরের শতকোটি টাকার সম্পদ। কিন্তু এত সম্পদ উদ্ধার করা হলেও পরবর্তীতে সেগুলো সংরক্ষণ করা হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।