শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

কাঠগড়ায় অসুস্থ কনস্টেবল সাক্ষ্য দিলেন ১১ জন

নারায়ণগঞ্জে সাত খুন

নারায়ণগঞ্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে এদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। পরে ১৬ মে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত। এর আগে সকালে সাত খুনের দুটি মামলায় গ্রেফতার নূর হোসেন, র‍্যাবের চাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তা তারেক সাঈদ, এম এম রানা, আরিফ হোসেনসহ ২৩ জনকে উপস্থিত করা হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, গতকাল ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। তারা হলেন— সাত খুন ঘটনার শিকার আইনজীবী চন্দন সরকারের স্ত্রী অর্চনা সরকার, তার ভাগ্নে মাধবকুমার দেব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজিম-উল আহসান, কনস্টেবল আবদুল লতিফ, নিহত তাজুলের বাবা আবুল খায়ের, নিহত সিরাজুল ইসলাম লিটনের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম, ডা. জলিল আহমেদ, ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আসাদুজ্জামান, ডা. শেখ ফরহাদ, ডা. মাঈনউদ্দিন ও লাশের সুরতহাল তৈরিকারী আকতার হোসেন।

এদিকে সাক্ষ্য গ্রহণের সময় কনস্টেবল আবদুল লতিফ মাথা ঘুরে কাঠগড়ায় পড়ে যান। ওই সময় আইনজীবীরা সাক্ষী আবদুল লতিফকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনি কি তারেক সাঈদকে চেনেন? চিনলে কীভাবে চেনেন?’ তখন আবদুল লতিফ ২৩ আসামির মধ্যে তারেক সাঈদকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘উনি তারেক সাঈদ’। এ কথা বলেই মাথা ঘুরে পড়ে যান। পরে অন্যরা তাকে উঠিয়ে মাথায় পানি দেওয়ার পর সুস্থ হন। এরপর তার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বেরিয়ে আবদুল লতিফ সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত রাতে আমি না ঘুমানোর কারণে মাথাব্যথা ছিল। ফলে অসুস্থবোধ করি।’ প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল সাতজন নিখোঁজের পর ওইদিন দিনগত রাত ৩টার দিকে নারায়ণগঞ্জ-শিমরাইল সড়কের নারায়ণগঞ্জ শহরের কিল্লারপুল এলাকায় চেকপোস্ট বসানো হয়। তখন তারেক সাঈদের বহন করা গাড়িকে থামিয়েছিল পুলিশ। ওই সময় ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালন করেছিলেন আবদুল লতিফ। সাত খুনের ঘটনায় দুটি মামলা হয়। একটি মামলার বাদী বিজয়কুমার পাল হলেন নিহত অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের মেয়েজামাই ও অন্য বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী। দুটি মামলাতেই অভিন্ন সাক্ষী হলেন ১২৭ জন করে। এ কারণে উভয় মামলার সাক্ষীদের একই সঙ্গে দুই মামলায় জেরা করা হয়। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দনকুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্ত শেষে প্রায় এক বছর পর গত ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র‍্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাত খুনের দুটি মামলায় নূর হোসেন ও র‍্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় নূর হোসেন ও র‍্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জন কারাগারে রয়েছেন। আর চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে এখনো ১২ জন পলাতক।

সর্বশেষ খবর