গৃহকর (হোল্ডিং ট্যাক্স) আদায়ে ‘হোল্ডিং ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম অটোমেশন’ পদ্ধতি চালু করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। তিন প্যানেলে বিভক্ত আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর এ পদ্ধতি চালু হলে নগরের ১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৯ গ্রাহক তাদের গৃহকরের সামগ্রিক হালনাগাদ তথ্য সহজেই পাবেন। খুব শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদ্ধতির উদ্বোধন করা হবে বলে জানা গেছে। চসিকের আইটি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গৃহকর আদায়ে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত ও দ্রুত কর আদায়ে চসিক অটোমেশন পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। নিজস্ব অর্থায়নে ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এ কার্যক্রমে ইতিমধ্যে আট সার্কেলের কর কর্মকর্তা, উপ-কর কর্মকর্তা, কর আদায়কারীসহ রাজস্ব বিভাগের প্রায় ২০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি সার্কেলে আগের দুটি কম্পিউটারের সঙ্গে আরও দুটি কম্পিউটার, প্রিন্টার, স্ক্যানার, মডেমসহ অটোমেশনের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ দেওয়া হবে। চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, একজন গৃহকরদাতা ঘরে বসেই হোল্ডিং নম্বরের মাধ্যমে সব তথ্য পাবেন। এর মাধ্যমে কেউ গৃহকর নির্ধারণে অনিয়ম করার সুযোগ পাবেন না। তা ছাড়া ওয়েবসাইটেই তার হালনাগাদ সব তথ্য থাকবে। তিনি বলেন, রাজস্ব বিভাগের অটোমেশন পদ্ধতি চালুর পর প্রকৌশল ও হিসাব বিভাগেও এ পদ্ধতি চালু হবে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘আরবান পাবলিক অ্যান্ড এনভায়নমেন্টাল হেলথ সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টে’র মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন হবে।
চসিকের আইটি কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হাসান বলেন, রাজস্ব বিভাগের অটোমেশন পদ্ধতিটি করদাতা প্যানেল, কর আদায়কারী প্যানেল, অ্যাডমিন প্যানেল— এ তিন ভাগে বিভক্ত থাকবে। এর মধ্যে করদাতা প্যানেলের মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই, কর মূল্যায়ন ও বিবরণ যাচাই, করের বিপরীতে চসিকের দাবি যাচাই, করদাতার আপিলের হালনাগাদ তথ্য জানা, অভিযোগ, জিজ্ঞাসা ও পরামর্শ-বার্তা প্রেরণ, করসংক্রান্ত চসিক প্রেরিত বার্তা দেখা এবং তথ্যগুলো প্রিন্ট করতে পারবেন একজন করদাতা। একইভাবে তথ্য যোগ করা, কর মূল্যায়ন, আদায়কৃত কর যোগ, করদাতার তথ্য অনুসন্ধান, করসংক্রান্ত বার্তা করদাতাদের কাছে পৌঁছানো যাবে। আর অ্যাডমিন প্যানেলের সব তথ্য চসিক কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ করবে।
রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে নগরের মোট হোল্ডিং সংখ্যা ১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৯। এর মধ্যে সরকারি ১ হাজার ৬২৪টি। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে চসিকের বার্ষিক পাওনা ৩৩৭ কোটি ১৮ লাখ ৯৩ হাজার ৫৫২ টাকা। এর মধ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছেই ২১১ কোটি ৭২ লাখ ৪২ হাজার ৯৫৬ টাকা। এর বিপরীতে উভয় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১১২ কোটি ২৫ লাখ ৩০ হাজার ৪৩৫ টাকা আদায় করা হয়।