শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কোটি টাকার ঘুষবাণিজ্য

চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস মুনছুরাবাদ ও পাঁচলাইশ অফিসে প্রতি মাসেই কোটি টাকার ঘুষ-বাণিজ্য হয় কয়েকটি সংকেতের মাধ্যমে। এতে প্রতিনিয়ত হয়রানির মধ্যে পড়ছেন পাসপোর্টের জন্য সাধারণ আবেদনকারীরা। দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা কৌশলে নিম্নশ্রেণির কর্মচারীদের মাধ্যমে এ অর্থ পেয়ে থাকেন। নিম্নশ্রেণির কর্মচারীদের সঙ্গে দালালদের যোগসাজশে প্রকাশ্যে চলছে এ বাণিজ্য। এ টাকার অংশ পুলিশ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে অফিসের দারোয়ান পর্যন্ত ভাগ-ভাটোয়ারা হয়ে থাকে। লিখিত এক অভিযোগ থেকে এবং সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, প্রতিদিন চট্টগ্রাম বিভাগীয় আঞ্চলিক অফিস মুনছুরাবাদ ও পাঁচলাইশ অফিসে নতুন পাসপোর্টের জন্য জমা পড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ আবেদন। এর মধ্যে মুনছুরাবাদে আবেদন জমা পড়ে চার শতাধিক। জরুরি ও সাধারণ মিলে প্রতি মাসে প্রায় ১৬ হাজার আবেদন জমা হয়। প্রতিটি আবেদনের বিপরীতে ১০ হাজার ৫০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হয় সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। ১৬ হাজার আবেদনের বিপরীতে ঘুষের ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা চট্টগ্রামের দুটি পাসপোর্ট অফিস থেকে একটি সংকেতের মাধ্যমে লেনদেন হয়ে থাকে। এতে দালালরা পাসপোর্টপ্রতি ৫০ টাকা নিলেও বাকি টাকা ভাগ হয়ে পাসপোর্ট অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে পিয়ন পর্যন্ত। প্রতিটি পাসপোর্টের টাকার তিন ভাগ হয়ে এক ভাগ চলে যায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পকেটে। বাকি অংশ ভাগ হয় নিম্নশ্রেণির কর্মচারী থেকে শুরু করে পিয়ন পর্যন্ত। ‘৮১’ ও ‘আরএম’ ইত্যাদি সংকেত ব্যবহার করা হয়। সে ক্ষেত্রে আবেদনে ভুল থাকলেও সেগুলো নজরে নেন না কাউন্টারের দায়িত্বশীলরা। ঘুষ লেনদেনে জড়িত এমন ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ওই দুই পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক আবদুল রশীদ, কাউন্টারের মাজহারুল ইসলাম, জামাল হোসেন, রিমন, আনছার রিদোয়ান, রিপন, মোজাম্মেল, রাসেল, অফিস সহকারী অহিদ, কানকাটা মাসুম, হাবিব, আউট সোর্সের তৌহিদ ও ইয়াহিয়া। এখানে রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা করছেন সম্প্রতি বদলি হয়ে আসা কিছু কর্মকর্তা ও দায়িত্বশীলদের নিকটজনেরা। আনছার রিপন ও রিদোয়ান একই স্থানে দীর্ঘ অনেক বছর ধরেই ঘুষ লেনদেনে জড়িত থেকেও বহাল তবিয়তে আছেন। এ ছাড়া প্রতিটি পাসপোর্টের পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য আলাদা ৮০০ টাকা দিতে হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর