শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বেড়েছে সবজি লবণের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেড়েছে সবজি লবণের দাম

বাজার দর

রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজারে এবং সবজির আড়তে সবজির পাহাড় জমেছে। বিশেষ করে কম পচনশীল পণ্য আলু, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, কাঁচা মরিচ এবং গাজর ইত্যাদির আড়তে সরবরাহ বেশি। গত সপ্তাহের তুলনায় দামও তুলনামূলক ঊর্ধ্বমুখী। তবে রসুনের দাম সবচেয়ে বেশি। গতকাল এক কেজি রসুন বিক্রি হয়েছে ১৯০ টাকায়। দেশের উত্তরাঞ্চলে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বৃহস্পতিবারের তুলনায় পাইকারিতে কয়েক পদের সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও মিরপুর বাজার সরেজমিন পরিদর্শনে এমন চিত্র দেখা গেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় অধিকাংশ সবজির দাম বেড়েছে। কিছু সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কেজিতে বেড়েছে। গরুর মাংসের দামও বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। বিভিন্ন প্রকার শাকের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মিরপুর বাজারের সবজি ব্যবসায়ী  মো. আলম বলেন, পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। এসবের পাশাপাশি লবণের দামও কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে।

গত সপ্তাহে প্রতি কেজি শিমের দাম ছিল ৬০ টাকা। গতকাল বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকায়। মুলার কেজি বেড়েছে ১০ টাকা। গাজরের কেজি ছিল ৫০ টাকা। বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। বাঁধাকপি ও ফুলকপির পিস ২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৩০ টাকা হয়েছে। পেঁপে ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকায়, কাঁচামরিচের দাম ছিল ৫০ টাকা, গতকাল ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া শালগম ৫০ টাকা। পাকা টমেটো ৭০ টাকা ছিল, বেড়েছে ১০ টাকা। কাঁচা টমেটো বিক্রি করা হচ্ছে ৪০ টাকা দরে। লাউয়ের পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার পিস ২০ টাকা। জলপাই ৩০ থেকে বেড়ে ৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। নতুন আলু ৮০ থেকে ১০ টাকা কমে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া পুরনো আলুর দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা। শসার দাম কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। করল্লার কেজি ১০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। উচ্ছের কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা হয়েছে। পটলের দাম ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকায়, কচুর লতির দাম ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা। বরবটি কেজিতে ২০ টাকা  বেড়ে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লম্বা বেগুন ৬০ টাকা ও গোল বেগুনের কেজি ছিল ৫০ টাকা। গোল বেগুনের দাম ১০ টাকা কমেছে। গরুর মাংসের কেজি ৪৩০ টাকা ছিল,  বেড়েছে ১০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৪০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের ডজন ১৬০ টাকা। লাল ডিম ৯৫ টাকা, হাঁসের ডিম ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। শাক বিক্রেতা হাবিব জানান, লাল শাকের আঁটি ১০ টাকা, ডাঁটা ১৫ টাকা, আগে ছিল ২০ টাকা। ডাঁটা শাকের আঁটি ১০ টাকা, পালং শাক ১০ টাকা, ধনেপাতার আঁটি ১০ টাকা, কলমি শাকের আঁটি ৮ টাকা। লাউ শাকের আঁটি ২০ থেকে ২৫ টাকা।

আড়তে সবজির স্তূপ কমছে দাম : নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম জানান, নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তে সবজির স্তূপ। বিশেষ করে কম পচনশীল পণ্য আলু, মিষ্টি কুমড়া ও গাজরের সরবরাহ বেশি। গত সপ্তাহের তুলনায় দামও নিম্নমুখী।

ঠাকুরগাঁও থেকে আসা বেগুন ২০, বগুড়ার বেগুন ২৫, বগুড়া ও রাজশাহীর মুলা ১২, ফুলকপি ২৪ ও পাবনার শিম ৩২ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া কুমিল্লার কচুর লতি ৩০, বাঁধাকপি ১২-১৭, চাঁদপুরের শসা ৪০, পাবনার শালগম ১৮ ও শিম ২৫-২৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। বাঁশখালীর এক চাষি জানান, চাষাবাদ, পানি, বিষ, সার ও মজুরি মিলে এক কানি (২০ গণ্ডা) জমিতে টমেটো চাষে খরচ পড়েছে ৬০-৭০ হাজার টাকা। মৌসুমের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিক্রি করেছেন সোয়া লাখ টাকা। এখন দাম পড়ে গেছে। আড়তে আমার টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। অথচ ফর্মুলা টমেটা (ওষুধে পাকানো) বিক্রি হচ্ছে ২০-২২ টাকা। ফরিদপুরের মধুখালী থেকে আসা হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়ার কেজি ২২ টাকা, সাতক্ষীরার ‘বাংলা’ মিষ্টি কুমড়া ১৪-১৬ টাকা। ছোট আকারের মিষ্টি কুমড়া ৬-৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রিয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি মঈনুদ্দিন চৌধুরী বলেন, উত্তরবঙ্গের ঈশ্বরদী, পাবনা, বগুড়া, নাটোরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে সবজি আসে চট্টগ্রামে। অবশ্য তিন পার্বত্য জেলা, চকরিয়া, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালী, সীতাকুণ্ড, রাঙ্গুনিয়া থেকেও চট্টগ্রাম শহরে সবজি আনেন বেপারিরা। চকরিয়া টমেটোর বিশাল মোকাম আছে। মাইনীমুখ থেকেও মৌসুম ভেদে প্রচুর সবজি আসে। তার মতে আড়তের সঙ্গে খুচরা বাজারের পার্থক্য বরাবরের মতোই বেশি হওয়ায় ভোক্তা পর্যায়ে এখনো অস্বস্তি রয়েছে।  

রিয়াজউদ্দিন বাজারে ১৪০টি সবজির আড়ত রয়েছে। এর বাইরে পাহাড়তলী, ইপিজেড (ফ্রিপোর্ট), স্টিলমিল বাজার, বহদ্দারহাটে সবজির আড়ত আছে। রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তগুলোর সমস্যা হচ্ছে বড় গাড়ি ঢুকতে পারছে না। বড় গাড়ি দূরে দাঁড় করিয়ে রেখে ভ্যানগাড়ি, ঠেলাগাড়ি ও ছোট পিকআপে আড়তে সবজি আনতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পাহাড়তলী, ইপিজেড, স্টিলমিল বাজারের আড়তগুলো বড় রাস্তার ওপর হওয়ায় তারা কিছুটা সুবিধা পাচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর