বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে পঞ্চগড়ে বসেছিল দুই বাংলার মিলনমেলা। ভারতে থাকা আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে এক পলক দৃষ্টিবিনিময় আর কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে দু-চারটে কথা বলার জন্য মানুষের ঢল নেমেছিল এই মেলায়। জেলার অমরখানা সীমান্তে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বসেছিল এই মেলা। প্রতিবারের মতো এবারও সকাল থেকে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে এসেছে ওপারে থাকা আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে। কাঁটাতারের ওপারে ভারতে থাকা আত্মীয়স্বজন আর এপারে বাংলাদেশিরা। কাঁটাতার তাদের বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। অনেক বছর পর আত্মীয়স্বজনদের পেয়ে অনেকে চোখের জলে বুক ভাসান। অনেকে কাঁটাতারের ওপর দিয়ে পাঠালেন বাংলার ইলিশ, কাপড়-চোপড়সহ নানা কিছু। ভারতে বাস করা আত্মীয়স্বজনরাও বাংলাদেশিদের দিলেন নানা উপহারসামগ্রী। শুক্রবার সকালবেলা মানুষের ঢল নামলেও আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখার অনুমতি মেলে বেলা ১১টার দিকে। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী এবং বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের সদস্যরা এ সময় কড়া নিরাপত্তা বজায় রাখেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষও বাড়তে থাকে মিলনমেলায়। লক্ষাধিক মানুষ ছুটে আসে এই মিলনমেলায়। ব্রিটিশ শাসনামল থেকে ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে বাংলাদেশিদের অনেক আত্মীয়স্বজন থেকে যান ভারতে। স্বাধীনতার পর দুই বাংলার সীমান্ত বন্ধ হয়ে যায়। ’৯০-এর দশকে ভারত সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করে। পাসপোর্ট-ভিসা করে ভারতে গিয়ে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করার সাধ্য না থাকায় নববর্ষের এই মিলনমেলার জন্য অনেকেই অপেক্ষায় থাকেন।
প্রতি নববর্ষে যাতে এই মিলনমেলার আয়োজন করা হয় এমনটাই আশা করেন স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে ছুটে আসা বাংলাদেশিরা। বিকাল ৫টায় ভেঙে যায় এই মিলনমেলা। আবার এক বছরের অপেক্ষা নিয়ে ঘরে ফেরেন দুই বাংলার স্বজনরা।