বর্ষা মৌসুমের এক মাস আগেই টানা মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ চলছে। কালবৈশাখী ও বজ ঝড়ের এমন সময়ে গতকাল বিকালে রাজধানীর আকাশ ছিল অনেকটা যেন কুয়াশায় ঢাকা। রাজধানীর অট্টালিকা ছুঁয়েছে মেঘ।
আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, দু-একদিনের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এটা কুয়াশা নয়, মেঘ। দেখতে কুয়াশার মতো হলেও কালবৈশাখী ঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টির সময়ে মেঘের আনাগোনা একটু নিচের দিকেই হয়। মাঝ বৈশাখে এমন আবহাওয়া স্বাভাবিক। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষা মৌসুম শুরুর ঢের বাকি। এরই মধ্যে এবার অসময়ে অনবরত ভারি বর্ষণ হচ্ছে। এমন বৃষ্টি অনেক বছর পরপর দেখা যায়।কিন্তু বৃষ্টিস্নাত ঢাকার আকাশ কুয়াশাচ্ছন্ন ভাবকে ‘ব্যতিক্রম’ই বলতে হয়। অবশ্য আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস হচ্ছে, আজ সোমবার থেকে চলমান বৃষ্টির উন্নতি হতে পারে রাজধানীতে। ধীরে ধীরে উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলেও বৃষ্টি কমে আসবে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ছিল মাইজদীকোর্টে ৯৮ মিলিমিটার। এরই মধ্যে ২ এপ্রিল সিলেটে ৭১ মিলিমিটার, ৩ এপ্রিল ৮১ মিলিমিটার, ৪ এপ্রিল চট্টগ্রামে ৫৮ মিলিমিটার, ৫ এপ্রিল শ্রীমঙ্গলে ১২২ মিলিমিটার, ৭ এপ্রিল সিলেটে ৬২ মিলিমিটার, ৮ এপ্রিল নেত্রকোনায় ২১ মিলিমিটার, ১৫ এপ্রিল দিনাজপুরে ৩৬ মিলিমিটার, ১৮ এপ্রিল তেঁতুলিয়ায় ৩৩ মিলিমিটার, ১৯ এপ্রিল মাদারীপুরে ১১৪ মিলিমিটার, ২০ এপ্রিল শ্রীমঙ্গলে ১৯৪ মিলিমিটার, ২১ এপ্রিল দিনাজপুরে ৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান জানান, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তত্সংলগ্ন বাংলাদেশে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। তিনি জানান, কালবৈশাখীসহ ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে। এ সময় রাজধানীসহ দেশের অনেক এলাকায় মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হচ্ছে। মাঝবৈশাখে এমন বৃষ্টি স্বাভাবিক। আর ঢাকার আকাশে বিকালে কুয়াশার মতো যা দেখা গেছে তা মেঘ। জলীয়বাষ্প বেশি থাকায় ভারী অংশ নিচের দিকে এসেছে। কালবৈশাখীর মৌসুমে মেঘের আকাশের নিচের দিকে আনাগোনা স্বাভাবিক। দু-একদিনের মধ্যে বৃষ্টিও কমে আসবে। এপ্রিলের শেষে গত বছরের চেয়ে এবার তুলনামূলক বেশি বৃষ্টি হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদরা জানান, এবার এ সময়ে অন্তত তিন কারণে বাংলাদেশে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ দেখা যাচ্ছে। আরব সাগরে পূবালী বায়ু প্রবাহের দুর্বলতা, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের বর্ধিতাংশের বিস্তার ও সিলেটের পার্শ্ববর্তী এলাকায় সাইক্লোনিক একটি সার্কুলেশনের কারণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। যার প্রভাবে আরও দুই দিন উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানান তিনি।