সোমবার, ১ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

এখনই সহ-সম্পাদকের তালিকা হচ্ছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

এখনই সহ-সম্পাদকের তালিকা হচ্ছে না

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদকের নামের তালিকা এখনই ঘোষণা করা হচ্ছে— পদপ্রত্যাশীদের এমন ধারণা থাকলেও তা হচ্ছে না। গত কমিটিতে খেয়াল খুশিমতো, ঢালাওভাবে সহ-সম্পাদক নিয়োগে জটিলতা সৃষ্টি হয়। তাই আর নতুন করে ভুল করতে চায় না সংশ্লিষ্ট নেতারা। ব্যাপক যাচাই-বাছাই করেই সহ-সম্পাদক মনোনীত করা হবে। ফলে পদ প্রত্যাশীদের আরও অপেক্ষা করতে হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।  দলের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, এবার কেন্দ্রীয় উপ-কমিটিকে সুশৃঙ্খল করে সাজানো হচ্ছে। বিগত সময়ে দায়িত্বে থাকা নেতাদের যাদের বিরুদ্ধে সামান্য অভিযোগও পাওয়া গেছে, তাদের কমিটিতে রাখা হবে না। এবার সহ-সম্পাদক পদে বিষয়ভিত্তিক কর্মী খোঁজা হচ্ছে। কারণ প্রত্যেকটি উপ-কমিটি আওয়ামী লীগের গবেষণা সেল। তাই এবারের সম্পাদকীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক পদে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিগত কমিটির সহ-সম্পাদক পদটি দেওয়া হয়েছিল নির্বাচনের আগে। নেতা-কর্মীদের দলের কার্যালয়মুখী করতেই সে সময় সহ-সম্পাদক পদটি দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার অনেক যাচাই-বাছাই করছি। ইতিমধ্যে অনেক বায়োডাটা জমা পড়েছে। সেগুলো পুঙ্খানুঙ্খুভাবে যাচাই বাছাই করছি। তবে এবারে সহ-সম্পাদক পদ কোনোভাবেই একশর ওপর করব না।’ কবে নাগাদ ঘোষণা করা হবে— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা কোনো ভাইটাল পোস্ট না। দলের বিভিন্ন সম্পাদকীয় পদগুলোকে সাহায্য করার জন্য সহ-সম্পাদক যুক্ত করা হয়। তাদের যে প্রয়োজন নেই তাও নয়। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, যদি থাকত তা হলে এখন সুনামগঞ্জে পাঠাতে পারতাম।’ 

দলীয় সূত্র মতে, গত কমিটিতে খেয়াল খুশিমতো, ঢালাওভাবে সহ-সম্পাদক নিয়োগের বিষয়ে দলীয় নেতাদের সামনে ও বিভিন্ন ফোরামে একাধিকবার ক্ষুব্ধ মনোভাব প্রকাশ করেছেন সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দায়িত্বপ্রাপ্তরা তখন বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনকে কারণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সামনে উত্থাপন করেছিলেন। কিন্তু এ ব্যাখ্যা সভানেত্রীর মনোপূত না হওয়ায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সহ-সম্পাদক নিয়োগের বিষয়টি এবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রী নিজেই দেখভাল করছেন। 

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ২৫ অনুচ্ছেদের ‘চ’ ধারায় (বিভাগীয় উপ-কমিটি গঠন) বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রত্যেক সম্পাদকীয় বিভাগের কার্যক্রম অধিকতর গতিশীল ও সমন্বিত করার লক্ষ্যে প্রতিটি সম্পাদকীয় বিভাগে একটি করে উপ-কমিটি গঠন করবে। উক্ত উপ-কমিটি ১ জন চেয়ারম্যান, ১ জন সম্পাদক, অনূর্ধ্ব ৫ জন সহ-সম্পাদক, প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিশেষজ্ঞ সদস্য, সংশ্লিষ্ট সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং নির্দিষ্টসংখ্যক সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হবে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, গঠনতন্ত্রের আলোকে এবার সর্বোচ্চ ৯৯ জন সহ-সম্পাদক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। সূত্র জানায়, ২০০২ সালের ২৬ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে প্রথমবারের মতো দলের গঠনতন্ত্রে সহ-সম্পাদক পদ সংযোজন করা হয়। পরবর্তীতে ৯৫ জন সহ-সম্পাদক নিয়োগ করা হয়েছিল। তাদের অনেকেই এখন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। এর পর ২০০৯ সালের ২৪ জুলাইয়ের কাউন্সিলে কোনো সহ-সম্পাদক নিয়োগ করা হয়নি।

সর্বশেষ ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর কাউন্সিলের পর কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার সঙ্গে ৬৬ জন সহ-সম্পাদকের নামও ঘোষণা করা হয়। এসব সহ-সম্পাদক নিয়োগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। পরে তা বেড়ে ৬০০ ছাড়িয়ে যায়।

সর্বশেষ খবর