সোমবার, ১৫ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

রেল-চট্টগ্রাম বন্দর তীব্র দ্বন্দ্ব

শত কোটি টাকার জমির মালিকানার প্রশ্ন

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

শত কোটি টাকার জমির দ্বন্দ্বে রেলওয়ে ও চট্টগ্রাম বন্দর মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। প্রায় ৫০ বছর ধরেই জমির মালিকানা দাবি করে আসছে দুটি সংস্থা। চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় প্রায় ১১৫ একর জমির বিরোধ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানান ধরনের যুক্তিও দেখানো হচ্ছে। বিএস জরিপে জমির মালিকানা বন্দরের নামে নথিভুক্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রেলওয়ে-বন্দর উভয় পক্ষই মালিকানা ফিরে পেতে তত্পরতা শুরু করে। এরই মধ্যে বন্দরের কারশেডের নামে ১০ একর জমি বন্দরের পক্ষ থেকে দখল করলে ২০০৭ সালে মামলা করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এ জটিলতা নিরসন নিয়ে সম্প্রতি রেলওয়ে ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বৈঠক করলেও কোনো ধরনের সুরাহা হয়নি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, শুধু বিএস জরিপের ভুলে বন্দর এই জমিকে ‘আমাদের’ বলে দাবি করছে। সরকারের নানান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে রেলের জমির চাহিদাও বেড়েছে। বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, রেলের ওপর পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় এসব জমি ঘিরে একাধিক প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন হলেও বন্দরের সঙ্গে রেলের জটিলতার কারণে এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে কালক্ষেপণ হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা না হলে দুটি সংস্থার দ্বন্দ্বে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রতিফলন ঘটবে না বলেই আশঙ্কা করছেন তারা।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা (উপসচিব) মো. জসিম উদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের (রেলের) ১১৫ একর জমি বহু বছর ধরেই বন্দর দখলে রেখেছে। এ জমির বিষয়ে আদালতে মামলাও হয়েছে। বর্তমানে সাক্ষী পর্যায়ে আছে। বন্দর এলাকায় কনটেইনার ও মালামাল পরিবহনের জন্য নির্মিত ভূমি এবং অব্যবহৃত ভূমির বন্দর নিজেদের মালিকানা দাবি করছে।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক বছর আগে ১০ একর জমি রেলের অনুমতি না নিয়েই দখল করে কারশেড ও অকশন গোলা নির্মাণ  করেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। বিষয়টি আন্তমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মীমাংসার জন্য বৈঠকও হয়েছে।’ তবে সুরাহা না হলে আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান হবে বলে তিনি জানান। চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (প্রশাসন) মো. জাফর আলম বলেন, বন্দরের কারণে এ অঞ্চলের রেল পরিবহন কার্যক্রম শুরু হয়েছে ব্রিটিশ আমলে। ফলে বন্দর এলাকার জমি বন্দর কিংবা রেলের ব্যবহারের জন্যই নির্ধারিত। দুটি সংস্থা আলাদা হওয়ার সময় বন্দরের পাওনা জমি এখনো বুঝে পায়নি। জরিপেও বন্দরের নামে জমির মালিকানা এসেছে। তিনি বলেন, বিষয়টি এখন আন্তমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে।

সর্বশেষ খবর